বিশেষ প্রতিবেদন

স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে জেলা উপজেলায় হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স

সারাদেশের জেলা উপজেলায় তৈরি হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে ১৭০টি কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গেছে, ৪৭০টির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব কমপ্লেক্সে থাকছে ছোট আকারের জাদুঘর। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে সারাদেশে গড়ে তোলা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স।

Advertisement

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শুধু মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সই নয়, যেখানে যেখানে বধ্যভূমি আছে সেগুলোও সংরক্ষণ করা হবে, সেখানেও ছোট খাট স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ দেশের মুক্তি সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যেন কেউ ভুলে না যায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের দেশ যেন গড়ে উঠে সে চেষ্টাই করছে বর্তমান সরকার।

মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য ছাড়াও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যদের আয় বৃদ্ধির সুবিধাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু জেলা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা ভবন নয়, মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য বর্তমান সরকার ৮ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। মুক্তিযোদ্ধার অনুপাতে প্রতি জেলা-উপজেলায় এসব বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। দেশে ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করা হচ্ছে। ২৭১ দশমিক ১২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৫০০ বর্গফুটের একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। মোট ২ হাজার ৯৭১টি বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২৬৩টি বাড়ি তৈরি হয়ে গেছে। বাকি ৩৮৭টি বাসস্থান তৈরির কাজ চলমান।

সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জাগো নিউজকে বলেন, দেশের মানুষ যেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে না যায়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারে সে লক্ষ্যেই সারাদেশে গড়ে তোলা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। তিনি বলেন, সারাদেশের সব বধ্যভূমিতে একই রকম স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কবর একই ডিজাইনে করা হবে, যাতে মানুষ দেখে সহজে চিনতে ও বুঝতে পারেন। এছাড়া পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযোদ্ধাদের গর্বিত সাফল্যের কথার পাশাপাশি চিহ্নিত রাজাকারদের কুকীর্তির কথাও থাকবে।

Advertisement

এতে করে শিক্ষার্থীরা মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য ও ধারণা পাবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংকে কষ্ট করে গিয়ে টাকা তুলতে হবে না। এ লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

এফএইচএস/ওআর