আন্তর্জাতিক

ব্রেক্সিট ইস্যুতে আলোচনা চালিয়ে নিতে চান ইউরোপীয় নেতারা

ব্রেক্সিট ইস্যুতে আলোচনা চালিয়ে নেয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। পরবর্তীতে ব্রেক্সিট ইস্যু নিয়ে যে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনায় থাকবেন তারা। খবর বিবিসি।

Advertisement

ব্রেক্সিট ইস্যুতে একটি সংশোধনী বিলের পক্ষে বুধবার পার্লামেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোটে পরাজিত হয়েছে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দল। এই পরাজয় ব্রেক্সিটের পক্ষে থাকা প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের জন্য একটি বড় ধাক্কা। পার্লামেন্টের ৩০৫ জন এমপি সরকারি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন এবং বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩০৯ জন।

একটি সংশোধনী বিলের পক্ষে ভোট দেন সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিরা। ওই বিল অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত যে কোনো চুক্তি বাস্তবায়নের আগে বাধ্যতামূলকভাবে পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। ইইউ উইথড্রয়াল বিল নামে পরিচিত ওই বিলে সংশোধনীর পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩০৯ এমপি এবং বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩০৫ এমপি।

ফলে মাত্র ৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন মে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হাউস অব কমন্সে এটাই তার প্রথম পরাজয়। ব্রেক্সিটের সংশোধনী বিলের ওপর ভোট গ্রহণের জন্য পার্লামেন্টকে একটি আইনি বৈধতা দিয়েছেন ব্রিটিশ এমপিরা।

Advertisement

তবে নতুন এই ভোটের ফলাফলের কারণে যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ব্রিটেনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক নিয়ে আরও আলোচনা হতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন ইউরোপীয় নেতারা।

ব্রাসেলসে বৃহস্পতিবার রাতে অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে নৈশভোজের পর ব্রেক্সিট সম্পর্কে বিবৃতি দিয়েছেন মে। সেখানে ইউরোপীয় নেতারা তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

ওই নৈশভোজে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরো ২৭ নেতা উপস্থিত ছিলেন। ব্রেক্সিটের পরবর্তী পদক্ষেপ এগিয়ে নিতে একটি চুক্তিতে তাদের অনুমোদন দেয়ার আহ্বান জানান মে।

ব্রেক্সিট ইস্যুতে আরো একটি নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। আগামী সপ্তাহেই তা শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Advertisement

ইউরোপীয় কমিশন বলছে, প্রথম পর্বে যথেষ্ট অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। পরবর্তীতে যে কোনো আলোচনা যেমন নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিমালা অনুযায়ী ব্রেক্সিট নিয়ে পরবর্তীতে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তার জন্য অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মে উপস্থিত থাকবেন না। ওই বৈঠকেই আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ভোটে মের পরাজয়কে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেছেন লেবার দলের নেতা জেরেমি করবিন। তিনি বলেছেন, এই ভোটের ফলাফল এটাই প্রমাণ করে যে, থেরেসা মে সরকার পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছেন। কিন্তু করবিনের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে মের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তাদের মতে, ব্রেক্সিটের এই সংশোধনী ব্রেক্সিট কার্যকরের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

বেশ কিছু নথি থেকে এটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারবে না যুক্তরাজ্য।

বুধবার রাতে পার্লামেন্টের ভোটে হেরে গেলেও ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া চলবে বলে উল্লেখ করেছেন থেরেসা মে। ব্রাসেলসে এক বিবৃতিতে মে বলেন, ইইউ উইথড্রয়াল বিলে ভোটে পরাজয়ে তিনি বেশ হতাশ হয়েছেন। তবে আইন প্রক্রিয়ার বেশ উন্নতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রী পরিষদে একটি বৈঠকে অংশ নেবেন মন্ত্রীরা। সেখানে তারা তাদের প্রথম পর্যায়ে আলোচনা করবেন। তবে সামনের সপ্তাহেও মে'কে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।

টিটিএন/এমএস