ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় বসবাসকারী প্রায় ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি নাগরিক শিগগিরই প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পদত্যাগ চান। ফিলিস্তিন সেন্টার ফর পলিসি ও সার্ভে রিসার্চের (এফসিফপিএসআর) নতুন এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত ৭ থেকে ১০ ডিসেম্বর এ জরিপ পরিচালনা করেছে ফিলিস্তিনের এ গবেষণা সংস্থা।
Advertisement
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেয়ার পর অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। জরিপে মাহমুদ আব্বাসের প্রতি ফিলিস্তিনিদের জোরালো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে। গত সেপ্টেম্বরের এক জরিপে আব্বাসের পদত্যাগ চাওয়া মানুষের সংখ্যার চেয়ে ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আব্বাসের প্রতি মানুষের সন্তুষ্টির পরিমাণ এক শতাংশ থেকে দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। ফিলিস্তিনের এই প্রেসিডেন্টের কাজের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মাত্র ৩১ শতাংশ মানুষ। তবে প্রায় ৬৬ শতাংশই তার কাজে হতাশ।
তবে ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি আব্বাসের পদত্যাগের পক্ষে মত দিয়েছেন; অন্যদিকে মাত্র ২৬ শতাংশ তার ক্ষমতায় থাকার পক্ষে। তিন মাস আগের এক জরিপে আব্বাসের পদত্যাগের পক্ষে ৬৭ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছিলেন। তবে আব্বাসের পদত্যাগ চাওয়াদের মধ্যে ৮০ শতাংশই গাজা উপত্যকার এবং ৬৪ শতাংশ পশ্চিম তীরের। তিন মাস আগে তার পদত্যাগের পক্ষে গাজার ৮০ শতাংশ এবং পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশ বাসিন্দা মত দিয়েছিলেন।
Advertisement
তাহলে আব্বাসের সফল উত্তরসূরী হিসেবে কাকে বেছে নেবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ৩৫ শতাংশ মারওয়ান বার্গহুথির ওপর আস্থা রেখেছেন। ২২ শতাংশ মতামত দিয়েছেন ইসমাইল হানিয়েহর প্রতি, অন্যদিকে মাত্র ৭ শতাংশ ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ দাহলানকে সমর্থন করেছেন।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে নেয়া পদক্ষেপে সন্তোষ রয়েছেন ৩৮ শতাংশ, তবে সরকার পুনর্গঠন কর্মসূচির প্রতি আস্থা নেই প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষের। ফিলিস্তিনের সঙ্গে পুনর্মিলনের সফলতার ব্যাপারে অধিকৃত ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের প্রায় ৫০ শতাংশ আশাবাদী হলেও নিরাশ ৪৫ শতাংশ। তবে এই সফলতার ব্যাপারে তিন মাস আগের এক জরিপে ৩১ শতাংশ আশা ও ৬১ শতাংশ মানুষ হতাশা প্রকাশ করেছিলেন।
ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণার ব্যাপারে ফিলিস্তিনের সবচেয়ে কার্যকর জবাব কী হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বলেছেন, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ গুটিয়ে নিতে হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ডাক দিতে হবে।
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনই সবচেয়ে কার্যকর হবে বলে মত দিয়েছেন ৪৪ শতাংশ। তবে ২৭ শতাংশ ফিলিস্তিনি আলোচনাকে কার্যকর উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছেন। অন্যদিকে ২৩ শতাংশ বলেছেন, অসহিষ্ণু আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
Advertisement
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও আরবের প্রভাবশালী দেশগুলোর ভূমিকার ওপর আস্থা একেবারেই তলানিতে। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ৮২ শতাংশ মনে করে তারা সৌদির ওপর কোনো আস্থা রাখেন না। এছাড়া আমিরাতের ওপর ৭৫ শতাংশ ও মিসরের ওপর ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনির আস্থা নেই।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর, এফসিফপিএসআর।
এসআইএস/আরআইপি