মতামত

প্রাথমিকেও প্রশ্নফাঁস!

এটা খুবই দুঃখজনক যে প্রশ্ন ফাঁসের মত গুরুতর অপরাধের ঘটনা ঘটেই চলেছে। নানা রকম উদ্যোগ স্বত্ত্বেও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাচ্ছে না। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হচ্ছে। সবশেষ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে মুন্সীগঞ্জে ১১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাংলা পরীক্ষা স্থগিত করেছে জেলা প্রশাসন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা সম্প্রতি। কিন্তু এতেই কি সমাধান মিলবে?

Advertisement

গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে মুন্সীগঞ্জে ১১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাংলা পরীক্ষা স্থগিত করেছে জেলা প্রশাসন। গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে সদর উপজেলার এসব স্কুলে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সকাল ১০টায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা ছিল। কিন্তু সোমবার রাতে বাংলা পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠলে জেলা প্রশাসক পরীক্ষা স্থগিত করার নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা গণমাধ্যমকে জানান, গতকাল রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠে এবং সত্যতা স্বরুপ জেলা প্রশাসকের ই-মেইলে প্রশ্ন পাঠায়। যার জন্য পরীক্ষা স্থগিত করার নির্দেশ দেই।

প্রশ্নফাঁসের রোগ কতটা মহামারী আকার ধারণ করেছে যে এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হচ্ছে। অধঃপতন কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকলে এ অবস্থা হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রশ্নফাঁসকারী একাধিক চক্র বিরাজমান। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে। তারা প্রযুক্তির অপব্যবহার করেও প্রশ্ন ফাঁস করছে। এদের পেছনে শক্তিশালী হাত থাকাও অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। অভিযোগ আছে সর্ষের ভেতরেই রয়েছে ভূত। নাহলে এই চক্রকে কেন সামাল দেয়া যাচ্ছে না। প্রশ্নফাঁসের কারণে দেখা দিচ্ছে বিশৃঙ্খলা। পরীক্ষার্থীরা নানা রকম গুজবে কান দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অভিভাবকরাও যার পর নাই চিন্তিত। এ অবস্থায় যে কোনো মূল্যে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতে হবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধানসহ আইন রয়েছে। কিন্তু সেই আইনে কারো সাজা হয়েছে এমন নজির মেলা ভার। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন ছাড়া সমাজে আইন প্রতিষ্ঠা কঠিন। যত ব্যবস্থার কথাই বলা হোক না কেন অপরাধীর শাস্তি না হলে কোনো অবস্থায়ই অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সর্ষের ভেতরের ভূত আগে তাড়াতে হবে। অভ্যন্তরীণ কোনো সহযোগিতা ছাড়া প্রশ্নফাঁস অসম্ভব ব্যাপার। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্নফাঁস রোধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

Advertisement

এইচআর/আইআই