খেলাধুলা

গেইলের ব্যাটে ২০ সেঞ্চুরি, ৮১৯ ছক্কা!

জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালান। কোনো নড়া-চড়া নেই। ক্রিস গেইল যেন জানেন, যেভাবেই মারুন না কেন, কোথায় গিয়ে পড়বে বলটা। বোলাররা যেভাবেই বল করুক, তিনি সেটিকে বাউন্ডারির অপর পাশে পার করে দেবেনই। ঢাকা ডায়নামাইটসের বোলাররা আজ নিজেদের চোখেই দেখলেন ঠাণ্ডা মাথার ‘খুনি’কে। নিজের ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে যেন একের পর এক খুন করে যান বোলারদের।

Advertisement

টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে কোন রেকর্ডটি গেইলের নামের পাশে লেখা নেই! তিনি ব্যাট হাতে মাঠে নামবেন আর রান-ছক্কার রেকর্ড হবে না তা কী করে হয়! ৬৯ বল খেলে ১৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস। এর মধ্যে ১৮টিই ছক্কা। শুধু বিপিএলই নয়, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে কোনো এক ম্যাচে এতগুলো ছক্কা মারার রেকর্ড আর কারও নেই।

এর আগে ১৭ ছক্কার রেকর্ড ছিল গেইলের নিজেরই। সেটা আইপিএলে। ২০১৩ সালে। নিজের গড়া রেকর্ড চার বছর পর এসে ভেঙে দিলেন গেইল। আবার বিপিএলে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৪ ছক্কা মারার রেকর্ড গড়েছিলেন চারদিন আগেই। খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে খেলেছিলে ১২৬ রানের ইনিংস। যেটা ছিল বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। দুটোই এক সঙ্গে ভেঙে দিলেন তিনি।

সব মিলিয়ে বিপিএলে ৫টি সেঞ্চুরি গেইলের। আর বিপিএলে সর্বোচ্চ ৫টি ইনিংসের চারটিই ক্যারিবীয় এই ব্যাটিং দানবের। ১৪৬ ছাড়াও তার নামের পাশে রয়েছে ১২৬*, ১১৬ এবং ১১৪ রানের ইনিংস। সেরা পাঁচে রয়েছেন কেবল বাংলাদেশের সাব্বির রহমান রুম্মন। গত বছর তিনি খেলেছিলেন ১২২ রানের ইনিংস।

Advertisement

তবে টি-টোয়েন্টির বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যানটি বিপিএলের ফাইনালে সেঞ্চুরি করে পৌঁছে গেলেন নতুন এক মাইলফলকে। সেখানে আর কখনও কেউ পৌঁছাতে পারবে কি না সন্দেহ। ঘরোয়া ক্রিকেটে এ নিয়ে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০ সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়লেন তিনি। তাকে ছুঁতে পারার সাধ্য এই মুহূর্তে আর কারও নেই। গেইলের পেছনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড ৭টি। মাইকেল ক্লিঙ্গার, লুক রাইট এবং ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। তিনজনের সেঞ্চুরি ২১টি। আর একাই গেইলের সেঞ্চুরি ২০টি।

শুধু সেঞ্চুরিই নয়, ছক্কা মারতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করা গেইল ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে মোট ছক্কা মেরেছেন ৮১৯টি। বাউন্ডারি যে খুব বেশি মেরেছেন তা নয়। ৮৩৩টি। অর্থাৎ ছক্কা এবং বাউন্ডারি মারার হার তার প্রায় সমানই।

৩২০টি টি-টোয়েন্টি খেলা গেইল আজ পৌঁছে গেলেন ১১ হাজার রানের মাইলফলকে। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলক তো আগেই ছুঁয়েছিলেন। এবার নিজেকেই ছাড়িয়ে গেলেন তিনি।

মজার তথ্য হলো, এ নিয়ে টানা সাত বছর তিনি প্রতি বছর টি-টোয়েন্টিতে অন্তত দুটি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ২০১১ সাল থেকে টানা প্রতি বছর কম করে হলেও ২টি করে সেঞ্চুরি করে যাচ্ছেন। অর্থাৎ গত সাত বছরে তিনি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ১৯টি। ২০ সেঞ্চুরির মধ্যে ১৩টি সেঞ্চুরি রয়েছে যেগুলো তিনি করেছেন অন্তত ২০০ স্ট্রাইক রেটে। ২০ সেঞ্চুরির মধ্যে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেটই হলো ১৭৬.১৯। এই ২০ সেঞ্চুরির মধ্যে মোট ২২৭টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। প্রতি ইনিংসে গড়ে অন্তত ১১টি করে ছক্কার মার ছিল তার।

Advertisement

আইএইচএস/বিএ