জাতীয়

হিজড়াদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণে জরিপ করবে পরিসংখ্যান ব্যুরো

দেশে তৃতীয় লিঙ্গ হিজড়াদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণে জরিপ করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)! সমাজসেবা অধিদফতরের পুরনো এক জরিপ অনুসারে দেশে হিজড়ার আনুমানিক সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।সম্প্রতি কথিত ১২ হিজড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজে লিঙ্গ নির্ধারণী ডাক্তারি পরীক্ষায় পুরুষ চিহ্নিত হলে দেশে হিজড়ার সঠিক সংখ্যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। চূড়ান্তভাবে মনোনীত হলেও ১২ জনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেছে সমাজসেবা অধিদফতর।২০১৩ সালে সরকার দেশে দীর্ঘদিন যাবত চরমভাবে অবহেলিত হিজড়াদের জন্য সংসদে আইন পাস করে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এ জনগোষ্ঠিকে সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে হিজড়া জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন নামে কর্মসূচি শুরু হয়। এ কর্মসূচির অধীনে তাদের প্রশিক্ষণ, মাসিক ভাতাসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়।জানা গেছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকেই বিবিএসকে নতুন করে জরিপ করার অনুরোধ জানানো হয়। অধিদফতরের উপ-পরিচালক পারভীন মেহতাবের কাছে জানতে চাইলে হিজড়াদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণে বিবিএস-এর জরিপ চালানোর উদ্যোগ গ্রহণ করার স্বীকার করলেও কবে নাগাদ এ জরিপ শুরু হবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন।সমাজসেবা অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, তাদের মাধ্যমে হিজড়া জনগোষ্ঠির মান উন্নয়ন কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে তারা দেখেছেন হিজড়া হিসেবে যাদের বলা হচ্ছে তারা আসলে হিজড়া নয়।অনুসন্ধানে জানা গেছে, আইসিডিডিআর’বি সর্বশেষ ২০১২ সালে হিজড়াদের সংখ্যা নিরূপণে একটি জরিপ চালায়। সে জরিপ অনুযায়ী দেশে হিজড়ার সংখ্যা ছিল ৯ হাজারের কিছু বেশি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক হিজড়া সংগঠনের কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, ওই জরিপে মাথা গুনে গুনে সংখ্যা নিরূপণ হয়নি। হিজড়া নেতাদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সংখ্যা নিরূপণ করা হয়েছে। তাই ওই সংখ্যা সঠিক তা বলা যাবে না।বর্তমানে দেশের সাতটি বিভাগে হিজড়াদের সংখ্যা নিরূপণে কাজ করছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সংগঠনের শীর্ষ কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, তারা রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগে হিজড়াদের সংখ্যা নিরূপণে ওয়ান টু ওয়ান (মাথা গুনে) কাজ করছেন।আইসিডিডিআরবির জরিপের সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণে এ চারটি জেলায় চার হাজারেরও বেশি হিজড়া থাকার কথা থাকলেও তারা পেয়েছেন মাত্র এক হাজার ৭শ জন।তিনি জানান, সমাজসেবা অধিদফতর হিজড়াদের প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে। গত বছর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার সময় দেখা গেছে যারা প্রকৃতপক্ষে পুরুষ কিন্তু সামাজিকভাবে হিজড়া হিসেবে স্বীকৃত তাদেরকেই প্রশিক্ষণ দিতে হয়েছে।প্রকৃত হিজড়াদের জীবনমান উন্নয়ন ও সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে সঠিক সংখ্যা নিরূপণ এখন সময়ের দাবি বলে ওই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন।এমইউ/বিএ/আরআই

Advertisement