স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তরুণ প্রজন্মের দাবিতে প্রশাসনের উদ্যোগে ২০১১ সালে নির্মিত হয় ‘রক্তধারা’। একাত্তরে মুক্তিকামী বাঙালিকে এখানে এনে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হতো। সে জন্যই এ বধ্যভূমিতে একটি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়, যার নাম রাখা হয় রক্তধারা।
Advertisement
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে চাঁদপুর শহরের পশ্চিমপ্রান্তে মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় পুরান বাজার এবং বড় স্টেশনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কয়েকটি নির্যাতন কেন্দ্র স্থাপন করে। যাকে পাকিস্তানিরা বলতো ‘টর্চার সেল’।
নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার ও রেলগাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনে যারা চাঁদপুরে পৌঁছতো, সন্দেহ হলে তাদেরকে আটকে রেখে এখানে নির্যাতন করা হতো। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে স্বাধীনতাকামী নারী-পুরুষদের এ টর্চার সেলে এনে অমানবিক নির্যাতন করা হতো। শেষে হাত-পা বেঁধে জীবন্ত, অর্ধমৃত বা হত্যা করে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর খরস্রোতে ফেলে দিতো। সে সময় হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস এ হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করতো।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার শিকার বীর শহীদের স্মরণে ২০১১ সালে মোলহেডের সন্নিকটে নির্মিত হয় স্মৃতিসৌধ ‘রক্তধারা’। তৎকালীন জেলা প্রশাসক প্রিয়তোষ সাহা স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এটি উদ্বোধন করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Advertisement
রক্তধারা স্মৃতিসৌধটি দেখতে আসা আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্মৃতিসৌধটি একাত্তরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দুঃসহ স্মৃতি বহন করছে। বর্তমান প্রজন্মের জন্য এটি আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে।’
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহীন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তরুণ প্রজন্মের উদ্যোগে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় রক্তধারা নির্মিত হয়। যাতে আগামী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে।’
এসইউ/এমএস
Advertisement