পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বেইলি রােড ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত এখানে পুরোদমে চলছে কেনাবেচা। অন্যান্য বারের মতো এবারের ঈদেও হরেক রকমের পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন বেইলি রোডের ব্যবসায়ীরা।সরেজমিনে দেখে গেছে, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক পোশাকের বিশাল সমাহার নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মূলত উচ্চবিত্তদের জন্য বেশিরভাগ পোশাক নিয়ে আয়োজন থাকলেও মধ্যবিত্তরাও ভিড় জমাচ্ছেন বেইলি রোডে।দেশের নাটকপাড়া হিসেবে খ্যাত রাজধানীর বেইলি রোডে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সব বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে এখানে ভিন্ন রকম আবহ বিরাজ করছে। দেশীয় পোশাকের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে বাইরের পোশাকও।রাজধানীর উত্তরা থেকে আসা ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান ঈদের কেনাকাটা করতে সপরিবারে এসেছেন বেইলি রোডে। তিনি জানান, বেইলি রোডে শপিং করে অন্যরকম অনুভূতি পান। তাই গত কয়েকবছর ধরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বিভিন্ন উপলক্ষে এখান থেকেই শপিং করেন তিনি।বেইলি রোডে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, মূর্তিতে পরানো নানা রঙের বাহারি শাড়ি দেখে মনে হয়, বাঙালি নারীর চিরন্তন সৌন্দর্য যেন ফুটে ওঠে এই শাড়িতেই। আর মোহনীয় ডিজাইনের বাহারি শাড়ির জন্য বরাবরই বিখ্যাত রাজধানীর নাটকপাড়া এই বেইলি রোড।দেশি সুতা, তাঁতিদের ঘাম ঝরানো শ্রম আর নয়নাভিরাম নকশায় তৈরি হওয়া শাড়িতে এরই মধ্যে সেজে উঠেছে পুরো বেইলি রোড এলাকা।ঈদ এলে বাঙালি নারীদের শাড়ি ছাড়া যেন সাজগোজ অপূর্ণই থেকে যায়। পাশ্চাত্যের ছোঁয়া এলেও বাঙালি মেয়েদের পোশাক পছন্দের তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে শাড়িই। রাজধানীর বেইলি রোডে গেলে সে কথারই প্রমাণ মেলে। প্রতিবছর ঈদ এলে শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের উচ্চ, মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারের নারীরা শাড়ি কেনার জন্য ছুটে আসেন বেইলি রোডে।সব বয়সী নারীদের কাছেই এখন দেশি সুতির শাড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখেই রাজধানীর এই অভিজাত এলাকায় গত ২৫ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে উঠেছে দেশি শাড়ির এই বাজার। এখান থেকে শাড়ি না কিনলে শিক্ষিত নারীদের ঈদের আনন্দ যেন পূর্ণই হয় না।অন্যমেলায় কর্মরত তোফায়েল জানান, কেবলমাত্র ঈদের জন্য নয় যেকোনো উপলক্ষেই বেইলি রোডে ভিড় করেন ক্রেতারা। এখানকার সব পোশাকের মান অনেক ভালো। ঈদকে কেন্দ্র করে রমজানের শুরু থেকেই বিক্রি ভালো হচ্ছে বলেও তিনি জানান।অপরদিকে বেইলি রোডে শাড়ির দোকান ছাড়াও বেশ কিছু দেশি ফ্যাশন হাউস যেমন চরকা, সাদা কালো, রঙ, অন্যমেলা, কে-ক্রাফ্ট, সজনী, উনিশ কুড়ি, রুমঝুম, জেসমিন, উৎসব, এম ক্রাফট, বেইলি শাড়ি কুটির, অনন্যা, ঝলক, রুমনি, স্মৃতি শাড়ি কুটির, বধূয়া, বুনন, এড্রয়েট, প্রভৃতি রয়েছে।এসব ফ্যাশন হাউসেও বৈচিত্র্যময় দেশীয় শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া এখানে পরিবারের সবার জন্য ঈদের পোশাক কেনাকাটার সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন দোকানে পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন পোশাকের বড় সংগ্রহ রয়েছে এখানে।এসব পোশাকের মধ্যে পাঞ্জাবি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, ফতুয়া ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা এবং থ্রি-পিস ৮৫০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এমএম/বিএ/আরআইপি
Advertisement