সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের মাঝে প্রায় আড়াইশ জন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের ট্রলারে করে টেকনাফে পৌঁছেছেন। রোববার বেলা ১টার দিকে পাঁচটি ট্রলারে করে টেকনাফের ঘাটে পৌঁছান তারা।
Advertisement
এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রলার চালানোর দায়ে ট্রলার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার সারাদিন থেমে থেমে উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি হয়। কক্সবাজারে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করায় সাগর ছিল উত্তাল।
ফলে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে প্রায় ৭০০ পর্যটক আটকা পড়েন। রোববার সকাল থেকে বৃষ্টি নেই। সংকেত থাকলেও দেখা মিলেছে রোদের।
Advertisement
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি এখন দুর্বল হলে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি এখন কক্সবাজার থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। তবে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত বহাল রয়েছে।
টেকনাফ সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সৈয়দ আলম বলেন, টেকনাফ থেকে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাচ্ছে না- এ খবর পেয়ে পর্যটকরা সকাল সাড়ে ৯টার পর সেন্টমার্টিনের জেটিঘাটে ভিড় করেন।
এ সময় পাঁচটি ট্রলারে ২৪৪ জন যাত্রী ওঠানো হয়। এ পর্যটকদের কাছ থেকে জন প্রতি ভাড়া নেয়া হয় ২০০ টাকা। সাগরে মাঝপথে ট্রলারগুলো উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়লেও কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ছাড়াই সাড়ে ১২টার দিকে তিনটি ট্রলার টেকনাফ কায়ুকখালিয়া ঘাটে পৌঁছায়। ২০ মিনিটের পর পৌঁছায় বাকি দুটি ট্রলার।
টেকনাফ ঘাটে পৌঁছানো কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম এলাকার রায়হান মাহমুদ বলেন, নির্দিষ্ট সময় ছুটি নিয়ে বেড়াতে এসেছিলাম। কিন্তু বেরী আবহাওয়ায় সেন্টমার্টিন আটকে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিলাম। বাকিদের অধিকাংশই আমার মতো। তাই ঝুঁকি জেনেও ট্রলারে টেকনাফ ফিরেছি। সাগরের মাঝে উত্তাল ঢেউয়ে পড়ার পর ভীত হয়ে উঠলেও নিরাপদে কূলে ফিরতে পেরে এখন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি।
Advertisement
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর আহম্মদ বলেন, সাগরে সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছ। কিন্তু সাগর তেমন উত্তাল নয়। সকাল থেকে বৃষ্টিও নেই। অন্য সময় এ ধরনের পরিস্থিতিতে ওই রুটে ট্রলার চলাচল করে। তাই পর্যটকরা যেতে চাওয়ায় তাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হোসেন সিদ্দিক বলেন, সাগরে সংকেত রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার না ছাড়তে ট্রলার মালিক সমিতিকে নির্দেশনা দেয়া আছে। যারা নিয়ম ভেঙেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু সকালে স্থানীয় চেয়ারম্যান ফোন করে বলেন, সাগর তেমন উত্তাল নয়। রোদ উঠেছে।
সায়ীদ আলমগীর/এএম/আরআইপি