রাজধানীসহ সারাদেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে টেলিফোনে মনিটরিং ও সরেজমিন পরিদর্শন বাধ্যতামূলক করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এখন থেকে আবশ্যিকভাবে ল্যান্ডফোনে প্রতিমাসে দুইবার দায়িত্বপ্রাপ্ত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকের উপস্থিতি পরিবীক্ষণ করবেন। এছাড়াও প্রতি দুই মাসে একবার সেখানে সরেজমিন পরিদর্শন ও প্রতিবেদন দাখিল করবেন। বিদেশে প্রশিক্ষণের যাওয়ার ক্ষেত্রে মনিটরিং ও সরেজমিন পরিদর্শনের পারফরম্যান্স পরীক্ষা করে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ও মনিটরিং সেলের আহ্বায়ক বাসুদেব গাঙ্গুলী সোমবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত মনিটরিং সেলের এক বৈঠকে চিকিৎসকের কর্মস্থলে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে মনিটরিং সেলের কর্মকর্তাদের শৈথল্য নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি যেকোনো উপায়ে ডাক্তারদের স্ব স্ব কর্মস্থলে হাজিরা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। বৈঠকে গত ছয় মাসের মনিটরিং প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সার্ভিসেস (এমআইএস) প্রকাশিত হেলথ বুলেটিন-২০১৪ অনুসারে দেশে বর্তমানে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকের সংখ্যা ২১ হাজার ৫৫৩ জন। তাদের মধ্যে ১৫ হাজার ১৯২ জন পুরুষ ও ছয় হাজার ৩৬১ জন নারী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কর্মস্থলে চিকিৎসকের উপস্থিতি তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের অনুপস্থিতির ফলে সাধারণ রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিনা অনুমতিতে চিকিৎসকের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। ফলে তারা বিব্রত হচ্ছেন।তারা জানান, গত পাঁচ বছরে অ্যাডহক ও বিসিএসের মাধ্যমে ৭-৮ হাজার নতুন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এক সময় চিকিৎসক সংকটের দোহাই দেয়া হলেও এখন আর তা বলার সুযোগ নেই। কর্মস্থলে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারলেই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। মনিটরিং সেলের আহ্বায়ক, অতিরিক্ত সচিব বাসুদেব গাঙ্গুলীর গত ৬ জুলাই চিঠির আদেশেও মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে শৈথল্যের বিষয়টি উঠে এসেছে। ওই চিঠিতে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং কার্যক্রম পর্যালোচনায় দেখা যায়, বেশির ভাগ কর্মকর্তা টেলিফোনে চিকিৎসকের উপস্থিতি পরিবীক্ষণ করছেন না, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শনও করছেন না। ফলে মনিটরিং সেলের কার্যক্রম পরিচালনা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিবিড় ও ধারাবাহিক পরিবীক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা আবশ্যক এবং পরিবীক্ষণের পর সুপারিশ বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। এমইউ/বিএ/এমএস
Advertisement