রাজধানীর উত্তরায় বিধবা ও বেকার নারীদের বিদেশে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পাচারের চেষ্টা করে আসছে একটি চক্র। তারা প্রথমে দামি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে কর্মী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়। এরপর সুযোগ বুঝে সরল নারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পাচার করে দেয়।রাজধানীর উত্তরা হতে আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের ৩ মহিলা সদস্যসহ ৫ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় ৯ জন নারী ভিকটিমকেও উদ্ধার করা হয়। পরে রাজধানী আগারগাঁওয়ে র্যাব-২ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অধিনায়ক (সিও) লে. কর্ণেল এসএস মাসুদ রানা।তিনি আরো জানান, গত সোমাবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল তুরাগ থানাধীন কামারপাড়াস্থ রোড নং-৬, ওয়ার্ড নং-২-এর ৪র্থ তলা ভবনের ৩য় তলা ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের মহিলা সদস্য রিনা বেগম (৩০), সীমা আক্তার মৌসুমী (১৯) ও শিল্পী আক্তারকে (২২) আটক করা হয়। এছাড়া পাচারের উদ্দেশ্যে আটক ৯ জন নারী ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।এসএস মাসুদ রানা বলেন, র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানায় পাচারচক্রের মুলহোতা শাহিন খন্দকার। উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে তার একটি অফিস আছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরার- ১০ নম্বর সেক্টরের উল্লেখিত ওই অফিসে অভিযান চালিয়ে ম্যানেজার পরিচয়দানকারী মো. আ. লতিফ (৪৫), মো. শহিদুল (৪৪)কে আটক করা হয়। এ সময় ১৯৫টি পাসপোর্ট, নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।আটক ম্যানেজার মো. লতিফের দেয়া তথ্য উল্লেখ করে র্যাব-২ এর সিও আরো বলেন, সম্প্রতি স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী সরকারি তদারকির মাধ্যমে সৌদি আরবে বে-সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গৃহকর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সৌদিতে নতুন কর্মসংস্থানের খবরকে কাজে লাগিয়ে শাহিন বড় ধরনের নারী পাচারের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে।এ কাজে সহায়তা করার জন্য নুরুল ইসলাম (খুলনা), আবুল হোসেন (ঢাকা), এনামুল (চট্টগ্রাম) ও কামরুল (বগুড়া) সহ আরো কয়েকজন দালাল দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বলেও জানানো হয়। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ম্যানেজার আরো জানায়, প্রতিষ্ঠানটির রিক্রুটিং এজেন্সির কোন লাইসেন্স নেই। মুলত প্রতারণা করে বিদেশে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে তারা নারীদের পাচারের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে সংগ্রহ করে উত্তরাস্থ শাহিনের ভাড়াটিয়া ফ্ল্যাটে আটকে রাখে। সেখান থেকে সুযোগ বুঝে মহিলাদের সৌদি আরবসহ মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচার করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছিল।উদ্ধারকৃত ভিকটিমদের বরাত দিয়ে র্যাব জানান, তাদের নিকট হতে ২০ হতে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অফিসের বেশ কিছু প্রোফাইল পাওয়া যায় যেখানে টাকার লেনদেনের বিষয়টিও আমাদের নজরে আসে।চক্রের অন্য সদস্যদের আটকের লক্ষ্যে র্যাবের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান অধিনায়ক (সিও) লে. কর্ণেল এসএস মাসুদ রানা।জেইউ/আরএস/আরআইপি
Advertisement