যুব বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ঘোষণা করা হয়েছে, এটা পুরানো খবর। তবে স্কোয়াড ঘোষণার পরপরই সাংবাদিকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে যে নামটি সেটি হচ্ছে, টিপু সুলতান!
Advertisement
কারণ এই নামটির সঙ্গে বেশিরভাগ সাংবাদিকই পরিচিত নন। না তাকে যুবাদের কোন সিরিজে দেখা গেছে, না ছিলেন সদ্য সমাপ্ত যুব এশিয়া কাপের দলে। তাহলে কে এ টিপু সুলতান?
যশোরের এই তরুণের সঙ্গে আজ একান্তে কথা হয় জাগো নিউজের প্রতিবেদকের সঙ্গে। নিঃসংকোচে নিজের সব কথা খুলে বলেন তিনি জাগো নিউজকে। জানান তার ভালো লাগার কথা। শোনান তার ওঠে আসার গল্প।
লাজুক চেহারায় এটাও জানান, ছোটবেলায় খুব একটা ভালো ছাত্র ছিলেন না। এজন্য খুব শাসনও করা হতো তাকে। তিনি বলেন, 'আসলে যখন ছোট ছিলাম, তখন লেখা পড়া কম করতাম। এখানে ওখানে খেলতে যেতাম। বাসায় অনেক মার খেয়েছি। পড়াশোনা যেহেতু করি না। তারপরে আমার এক স্যার ছিল যে আমাকে খুব মারত।'
Advertisement
মজার ব্যাপার হলো, ওই মার দেয়া গৃহশিক্ষকের কথাতেই ক্রিকেটে পুরো মনোযোগ দেন টিপু সুলতান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'স্যারই একদিন বাসায় বলেছিলেন। যেহেতু আমি খেলায় বেশি মনোযোগী, তাই আমাকে যেন খেলতে দেয়। তারপর বাসা থেকে খেলতে দিয়েছে। আস্তে আস্তে খেলা শুরু করি। সব জায়গায় ভালো খেলছি। তারপর একাডেমিতে ভর্তি হয়েছিলাম। সেখান থেকেও অনেক সাহায্য পেয়েছি। অনেক কিছু শিখেছি।'
কোন সিরিজ বা এশিয়া কাপ না খেলেও বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকার রহস্য নিজেই ভাঙলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। তিনি জানান, 'আসলে পারফর্ম করেছি ঢাকা লিগে। ডিস্ট্রিক্ট লিগেও পারফর্ম করেছি। এ ছাড়া তারা হয়তো কিছু একটা ভেবেছেন। তাই হয়তো আমাকে নিয়েছেন।'
এদিকে নিজের গত কয়েক বছরের উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'প্রথম খেলেছি সেকেন্ড ডিভিশনে। তো সেখানে ১৪ ম্যাচে ৩১ টা উইকেট নিয়েছিলাম। প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেট পেয়েছিলাম। ওই টিমটা ওইবার চ্যাম্পিয়ন হয়। পরে ফার্স্ট ডিভিশন খেলেছি ওই দলের হয়েই। সেবারও টপ উইকেট টেকার ছিলাম। সেবার ৩৪ টা পেয়েছিলাম ১৬ ম্যাচে। ডিস্ট্রিক্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তো ৫ উইকেট পেলাম। ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলাম। তারপরই ক্যাম্পে ডাক পেলাম।'
স্কোয়াডে থাকার বিষয়টা প্রথম টিভিতে দেখেছে টিপু। লাজুক হেসে সে কথাও জানালেন তিনি। তিনি বলেন, ' অনেক ভাল লেগেছে। আসমে প্রথমে এশিয়া কাপেও ছিলাম না। তারপরে হোম সিরিজেও ছিলাম না। ওয়ার্ল্ড কাপে আছি। খুব ভালো লাগছে। টিভিতে হেডলাইনে (স্ক্রলে) দেখেছি। সেখান থেকে জানতে পেরেছি যে আমি আছি স্কোয়াডে। '
Advertisement
নিজের লক্ষ্য নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'লক্ষ্যটা হল, যেহেতু ওয়ার্ল্ড কাপে সুযোগ পেয়েছি, তো সেখানে অনেক ভালো করার ইচ্ছা আছে। এটাই আমার লক্ষ্য।'
বোলিংয়ের পাশাপাশি মিডল অর্ডারে ব্যাটিংটাও করেন টিপু। তবে বোলিংটাকেই বেশি প্রাধাণ্য দিচ্ছেন তিনি। এ নিয়ে তিনি বলেন, 'আমার বোলিংটা আগে। তারপর ব্যাটিং। তবে ব্যাটিং নিয়েও কাজ করছি, যেন ভালো করতে পারি।'
এমএএন/এমএমআর/জেআইএম