ক্যাম্পাস

দুর্বল হয়ে পড়ছেন ওয়ালিদ আশরাফ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে গত ২৫ নভেম্বর থেকে অনশনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্য কোর্সের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ আশরাফ ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছেন। এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আশানুরূপ কোনো বক্তব্য পাননি তিনি।

Advertisement

বুধবার দুপুরে স্মৃতি চিরন্তনে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ালিদ আশরাফ নিজের টানানো তাঁবুর ভেতরে উপুড় হয়ে শুয়ে আছেন। এতই দুর্বল যে তার মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না। নিশ্বাস নিচ্ছেন কষ্ট করে।

শুধু বললেন, ‘যতদিন লাগবে আমি আমার এ অনশন চালিয়ে যাব। এর জন্য তো কাউকে না কাউকে কাজ করতে হবে, আমি সেটিই করে যাচ্ছি।’

১২ দিন যাবৎ চালিয়ে যাওয়া লাগাতার এ অনশনে ইতোমধ্যে তাকে সমর্থন দিয়েছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো। তবে সাড়া মেলেনি বড় দুটি ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও অনেকে সমর্থন দিয়েছেন ওয়ালিদ আশরাফের অনশনে। বিভিন্ন সময় সমর্থন দিয়ে স্মৃতি চিরন্তনে অবস্থানও করেছেন অনেকে।

Advertisement

এদিকে গত সোমবার রাতে ডাকসুর দাবিতে স্মৃতি চিরন্তনে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কনসার্ট করা হয়। এর আগে ২ নভেম্বর ডাকসুর দাবিতে স্মৃতি চিরন্তন এলাকায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে বাম সমর্থিত ছাত্র সংগঠনগুলো।

প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর বুধবার দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওয়ালিদ আশরাফ ক্রমেই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। আজ কথা বলতে পারছেন না। সেলাইন দেয়া লাগতে পারে। নতুবা তার বেঁচে থাকাই কঠিন হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এখনও কোনো সাড়া পাননি ওয়ালিদ আশরাফ। তাই তিনি অনশন অব্যাহত রাখতে চাচ্ছেন।’

এদিকে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সে অনশন করার আগে আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি। হঠাৎ করেই সে অনশন করছে। তাই তাকে নিয়ে আমাদের ভাবনা নেই। তার ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ আছে। সে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কনসার্ন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও কনসার্ন।’

Advertisement

প্রক্টর অভিযোগ করে বলেন, ‘ওয়ালিদ আশরাফ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পবিত্র জায়গাকে (স্মৃতি চিরন্তন) নানাভাবে অপবিত্র করার চেষ্টা করছে। এছাড়া সে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও প্রশাসনকে নিয়ে নানা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছে। বিভিন্ন জায়গায় কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য লিখেছে।’

প্রক্টর মনে করেন, ‘এতে তার কোনো উদ্দেশ্য আছে।’ তবে ওয়ালিদ আশরাফের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার দ্বার সবসময় উন্মুক্ত বলেও জানান প্রক্টর।

উল্লেখ্য, ডাকসুর দাবিতে ওয়ালিদ আশরাফ গত ২৫ নভেম্বর অনশন শুরু করলে বাম সমর্থিত কয়েকটি ছাত্র সংগঠনসহ কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময় স্মৃতি চিরন্তন এলাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে, উপ-উপাচার্য ভবনের সামনে এবং ভবনের গেটে (সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক এখনও উপাচার্য ভবন না ছাড়ায় বর্তমান উপাচার্য আখতারুজ্জামান উপ-উপাচার্য ভবনে থাকছেন) নানা ধরনের ‘কুরুচিপূর্ণ’ শব্দ লেখে ডাকসুর দাবি করেন। যার মধ্যে একটি ছিল, ‘ডাকসু দে হারামজাদা।’ তবে এ ধরনের বাক্য ব্যবহারের জন্য সমালোচিত হয় ওয়ালিদ আশরাফের অনশন।

এমএইচ/জেডএ/জেআইএম