আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা সংকট: মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা

মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর ‘জাতিগত নিধন অভিযানের নিন্দা ও শিগগিরই তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ (হাউস অব রিপ্রেসেন্টিটিভ)। উত্তরাঞ্চলের রাখাইন প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মিয়ানমারের নেতাদের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে রোহিঙ্গা সংকটে সীমান্ত খুলে রাখায় মার্কিন এই প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবনায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে ।

Advertisement

রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় মিয়ানমার সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে পরিষদ। রাখাইন প্রদেশে শিগগিরই মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা ও রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের আহ্বান জানিয়ে প্রতিনিধি পরিষদে ওই প্রস্তাব পাস হয়েছে মঙ্গলবার। রাখাইনের অস্থিতিশীলতায় গত আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেট দলীয় হুইপ স্টেনি এইচ হোয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই হত্যাযজ্ঞ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। বার্মার নেতাদের কাছে শক্তিশালী বার্তা পাঠানোই আমাদের প্রস্তাবনার উদ্দেশ্য। মিয়ানমারের নেতাদের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার বিচার করা হবে বাসিন্দাদের স্বতন্ত্র অধিকার এবং বার্মা সীমান্তের ভেতরে বসবাসকারী সব মানুষের স্বাধীনতার প্রতি দেশটির সরকারের শ্রদ্ধার ভিত্তিতে; তাদের বিশ্বাস বা জাতিগত কোনো কিছুই এখানে বিবেচনা করা হবে না।’

কংগ্রেসম্যান জো ক্রোলি ও এলিয় এনজেলের উত্থাপিত এই প্রস্তাবনায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর ‘ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ’র নিন্দা এবং সহিংসতা শিগগিরই বন্ধের আহ্বান জানানো হয়।

Advertisement

পুরো রাখাইন প্রদেশে মানবিক ত্রাণ তৎপরতা শুরু করার অনুমতি দিতেও মিয়ানমার সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রতিনিধি পরিষদ; যেখানে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছে।

প্রস্তাবনার ব্যাপারে এনজেল বলেন, ‘এতে অং সান সু চিকে (মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী) নৈতিক নেতৃত্ব চর্চার আহ্বান জানানো হয়েছে; যা বর্তমানে বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’

‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানোর যে দাবি করেছে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি... এটা বাজে কথা। সেখানে যা ঘটেছে তা জাতিগত নিধনের পাঠ্য-পুস্তকীয় উদাহরণের শামিল।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে বিদ্রোহীদের হামলার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সেখানে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানে ছয় লাখ ২২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছে।

Advertisement

এনজেল বলেন, আমাদের সরকার যখন দরজা বন্ধ করার শোরগোল করছে তখন রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খুলে রাখায় আমাদের গভীর কৃতজ্ঞতা পাওয়ার যোগ্য বাংলাদেশ।

সূত্র : পিটিআই।

এসআইএস/আইআই