আইন-আদালত

মোবাইল কোর্ট আইনে হাতাহাতির ধারা আছে?

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে সাজা দিয়েছেন তা মোবাইল কোর্ট আইনের কোন ধারায় আছে বলে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। এ সময় আদালত বলেছেন, মোবাইল কোর্ট আইনের ১০৪ টি ধারা আছে, কোন ধারায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের সাজা দেয়া হয়েছে।

Advertisement

এ সময় আদালত রিটকারীর আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, কোন ধারায় সিভিল সার্জনের সাজা দেয়া হয়েছে। মোবাইল কোর্ট আইনে কি হাতাহাতির ধারা আছে?

রিট শুনানির সময় মোবাইলকোর্ট পরিচালনার বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে বলেন, এর আগে এক কেন্দ্রে পরীক্ষার চলাকালীন সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়ানো হয়েছিল। এরপর সামান্য কথা কাটাকাটির জের ধরে ভ্রাম্যমান আদালত দিয়ে কারাগারে পাঠানো হলো লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জনকে।

সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি এবং তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

আগামী ১৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় তাদের আদালতে হাজির হয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ওইদিন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন সালাহ উদ্দিন শরীফকেও আদালতে থাকতে বলা হয়েছে।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারিসহ তলবের আদেশ দেন।

তাদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন ও আইনজীবী হাসান এমএস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

গতকাল (৪ ডিসেম্বর) সোমবার লক্ষ্মীপুর ডিসি কলোনির ভেতরে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কাকলি শিশু অঙ্গন বিদ্যালয়ে প্রবেশকে কেন্দ্র করে সালাহ উদ্দিন শরীফ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলামের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়।

Advertisement

এ ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) মো. নূরুজ্জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সালাহ উদ্দিন শরীফকে‘অসদাচরণের দায়ে’ তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

সালাহ উদ্দিন শরীফকে মঙ্গলবার পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিন দেন লক্ষ্মীপুর জেলা হাকিম আদালতের বিচারক মীর শওকত হোসেন।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে লক্ষ্মীপুরের ঘটনার ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামাল হোসেন নিয়াজী এবং আশফাকুর রহমান মঙ্গলবার সকালে একটি রিট দায়ের করেন।

দুই কর্মকর্তাকে তলবের পাশাপাশি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সাজা দেয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল দিয়েছে আদালত।

আইন সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সিভিল সার্জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এফএইচ/এনএফ/আইআই