ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদ শূন্য ঘোষণার পর রাজনীতির মাঠে আবারও উত্তাপ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের বড় দু’দলের অনেক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ-বিএনপির জন্য এটা একটা বড় টার্নিং পয়েন্ট। এছাড়া বিএনপির জন্য এটা অগ্নিপরীক্ষা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Advertisement
অতীতে নির্বাচন নিয়ে দ্বিচারিতায় যে টানাপড়েনের ইতিহাস তৈরি করেছে কয়েকবার ক্ষমতায় থাকা বিএনপি, ডিএনসিসি নির্বাচনে আবারও অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের। জাতীয় নির্বাচনের আগে ডিএনসিসি নির্বাচন নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণ করছে দলের নীতিনির্ধারকরা।
নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং না নেয়ার ফলাফল, সরকারের অবস্থান এবং জাতীয় নির্বাচনে এর প্রভাব এমন সব বহুমাত্রিক ফ্যাক্টর নিয়েও ভাবছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনেক গুরুত্ব বহন করছে। তাই এককভাবে আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে না। এ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। বৈঠকের মাধ্যমে প্রার্থীও চূড়ান্ত করবেন।
Advertisement
দলীয় একটি সূত্র জানায়, বিগত নির্বাচনে তাবিথ আউয়ালকে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেয়া হলেও এবার নতুন কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে নাকি তাবিথকেই দেয়া হবে এ নিয়ে বহুমাত্রিক চিন্তা ভাবনা চলছে। পরিস্থিতি বুঝে নতুন প্রার্থীর প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে।
প্রার্থী হিসেবে এবার যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম, দলের ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু এবং ২০ দলীয় জোটের শরীক দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আলোচনার শুরুটা করেছেন চেয়ারপারসন নিজেই।
তবে ২০১৫ সালের বাস্তবতা এবং বর্তমান বাস্তবতা মাথায় রেখেই প্রার্থী চূড়ান্ত করার পক্ষে বেশিরভাগ মত দলের শীর্ষ নেতাদের। তাই প্রার্থী বাছাইয়ের কোনো রকম ভুল সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছেন না খালেদা। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পক্ষেও মত দিচ্ছেন শীর্ষ নেতাদের অনেকে।
Advertisement
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনেই আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। নীতিগতভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত তো আমাদের রয়েছেই। সেই নীতি থেকে তো আমরা সরে যাইনি। সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও অংশ নিয়েছি। ঢাকাতেও আমাদের নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে।
তিনি আরও বলেন, খুব খারাপ সময়ে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন করেছি। যদিও এ দুটিতে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। যেহেতু ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে দলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তারপর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, মাত্রই তো মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা হল। এ নিয়ে আলাপ-আলোচনার পর আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এমএম/এএসএস/জেএই্চ/এএইচ/আইআই