আয়াতুল কুরসিতে আল্লাহ তাআলা নিজের সম্পর্কে ঘোষণা দেন- ‘ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়া মা খালফাহুম অর্থাৎ আল্লাহ তাআলাই সেই সত্ত্বা; যিনি সৃষ্টির অগ্র-পশ্চাৎ (আগের ও পরের; অনুভবযোগ্য ও অযোগ্য) যাবতীয় অবস্থা এবং ঘটনা সম্পর্কে অবগত।’ সৃষ্টির অতিত ও ভবিষ্যৎ বিষয়াদি সম্পর্কে জানার ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া কোনো সৃষ্টির নেই। আয়াতুল কুরসির ষষ্ঠ অংশে আল্লাহ তাআলা মানুষের অতিত ও ভবিষ্যতের খবরাখবর জানার ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন।
Advertisement
আয়াতের আগের অংশে আল্লাহ তাআলা ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের অষাঢ় যুক্তি ও সুপরিশ সংক্রান্ত বিষয়ে হুশিয়ারি ঘোষনা করেছেন। ইসলাম ব্যতিত অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা পরকালে অযৌক্তিক সুপারিশ লাভের দাবি করে বেড়াত। এ জন্য আল্লাহ তাআলা পরকালের সুপারিশের ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন এমন কোনো ব্যক্তি নেই, যে তাঁর অনুমতি ব্যক্তি তাঁরই কাছে কারো ব্যাপারো কোনো ধরণের সুপারিশ করতে পারে।
আলোচ্য আয়াতাংশটিও আয়াতুল কুরসির ষষ্ঠ বক্তব্য। যা দুনিয়াতে আল্লাহ তাআলার একচ্ছত্র আধিপত্য ও একত্ববাদের মহা ঘোষণা। এ বক্তব্যে শুধামাত্র আল্লাহ তাআলাই সৃষ্টির আগের এবং পরের যাবতীয় বিষয় ও ঘটনা সম্পর্কে অবগত বলে কঠিন ঘোষণা প্রদান করেছেন।
শুধুমাত্র উপস্থিত, অনুপস্থিত বিষয় সম্পর্কেই তিনি অবগত নন বরং অনুভবযোগ্য ও অযোগ্য সবকিছুর জ্ঞানই আল্লাহ তাআলার রয়েছে। সবকিছুকেই তাঁর জ্ঞানে সমাবভাবে বেষ্টন করে আছে।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা যেহেতু যাবতীয় সৃষ্টির স্রষ্ঠা। আর কোনো সৃষ্টিই তার চেয়ে বড় নয়। তাই কোনো ব্যক্তিই তার কাজ সম্পর্কে প্রশ্ন বা খবরদারী করার অধিকার রাখে না।
এ বক্তব্যের সুস্পষ্ট বিষয় হলো->> দুনিয়ার সব কিছুর জন্মের আগে ও জন্মের পরের যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনা আল্লাহ তাআলার জানা রয়েছে।
>> আবার এ বক্তব্যের ইঙ্গিত এও হতে পারে যে, অগ্র বলতে সে অবস্থা বোঝায়; যা মানুষের জন্য প্রকাশ্য। আর পশ্চাৎ বলতে, যা মানুষের জন্য অদৃশ্য। তাতে অর্থ হবে এমন যে, কোনো কোনো বিষয়ের জ্ঞান মানুষের জানার আওতায় রয়েছে; আবার কোনো কোনো বিষয়ে মানুষের জ্ঞান নেই।(তাফসিরে মারেফুল কুরআন)
মানুষের কিছু বিষয় প্রকাশ্য আর কিছু বিষয় অপ্রকাশ্য হলেও আল্লাহ তাআলার কাছে সবই প্রকাশ্য। তিনি সব বিষয় সম্পর্কে সমধিক অবগত। যা সৃষ্টির জ্ঞান-বিজ্ঞানের কোনো শাখাতেই অন্য কারো পক্ষেই সব বিষয়ে খবরাখবর রাখা সম্ভব নয়। এটা শুধু আল্লাহ তাআলার জন্যই নির্দিষ্ট।
Advertisement
সুতরাং যারাই আয়াতুল কুরসিরতে উল্লেখিত আল্লাহ তাআলার শান ও মানের ওপর অগাধ আস্থা এবং বিশ্বাস অর্জনকারী হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করবে তাদের জন্যই দুনিয়া ও পরকালের সফলতা। আর আয়াতুল কুরসির ফজিলত ও মর্যাদাও তারাই লাভ করবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আয়াতুল কুরসিতে ঘোষিত গুণগুলোর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে শিরকমুক্ত ঈমান লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস