জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংসদে দায়িত্বরত তিন প্রধান নারীকে শোপিস বলার পর স্ত্রী রওশন এরশাদ ক্ষমা চাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এরশাদ বলেছেন, সংসদে আমার বক্তব্যের জন্য আর কারো ক্ষমা চাওয়ার এখতিয়ার নেই। বাজেট আলোচনায় আমার প্রত্যাহার (এক্সপাঞ্জ) করা শব্দের জন্য বিরোধীদলীয় নেতা যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তা তার এখতিয়ার বহির্ভূত। তাই তার বক্তব্য থেকে আমার অংশটুকু বাদ দেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।সোমবার দুপুরে জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত এক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এসব কথা বলেন।প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা কথায় কথায় বলি আমাদের প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, সংসদ উপনেতা নারী; বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী; কিন্তু এরা শোপিস। বাইরে কিন্তু এই অবস্থা নেই। বাইরে নারীরা অসহায়।’এরশাদের এমন বক্তব্যে ওই দিন তাৎক্ষনিকভাবে এর প্রতিবাদ জানান উপস্থিত নারী সংসদ সদস্যরা। প্রতিবাদের এক পর্যায়ে এরশাদ ‘শোপিস’ শব্দটি প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু এরপরেও থেমে যায়নি সংসদ। এরশাদের বক্তব্য শেষে স্পিকার তার নোটে বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাননীয় সংসদ সদস্য যেসব অসংসদীয় বক্তব্য রেখেছেন সেগুলো এক্সপাঞ্জ করা হলো। আবার বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ তার বক্তব্যে এরশাদের অসংসদীয় বক্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করেন।রওশনের ওই ক্ষমা প্রার্থনার সূত্র ধরে এরশাদ বলেন, ‘এখানে আমাদের পরিচয় সবাই সংসদ সদস্য। এখানে কোন পার্সোনাল রিলেশন দেখানোর সুযোগ নেই।’শব্দ এক্সপাঞ্জ করা নিয়ে স্পিকারের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, আমার বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হয়েছিলো। দেশের শীর্ষ পদে নারীর অবস্থান দেখে দেশের গোটা নারী সমাজের চিত্র বোঝানো যাবে না, আমি এই কথা বলতে চেয়েছিলাম। এই কথাটি অসংসদীয় নয়, আন পার্লামেন্টারি নয় বলে আমি মনে করি। তারপরেও আমি কথাটি উইথড্রো করে নিয়েছিলাম।তিনি বলেন, মাননীয় স্পিকার আপনি সেই শব্দটি এক্সপাঞ্জ করেছেন। প্রত্যাহার করা বাক্য এক্সপাঞ্জ করার প্রয়োজন হয় কি না সংসদের অভিভাবক হিসেবে আপনি সেটা বিবেচনা করবেন। সেদিন আমার বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার পর আমি যে দুঃখ পেয়েছি সেই দুঃখ নিয়েই মরতে হবে। সেই দুঃখ ভুলবার নয়।এরশাদের এই বক্তব্য চলাকালে অনেকেই টেবিল চাপড়ে তার বক্তব্যের সমর্থন জানান। এ সময় অধিবেশন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।এইচএস/এআরএস/পিআর
Advertisement