বিশেষ প্রতিবেদন

রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে দুর্ভোগে মিরপুরবাসী

দীর্ঘদিন ধরে মিরপুর এলাকার বেশির ভাগ রাস্তায় চলছে সংস্কার কাজ। মেট্রোরেলসহ কখনও বিদ্যুৎ লাইন, স্যুয়ারেজ লাইন, আবার কখনও চলছে ওয়াসার পানির লাইন সংস্কার। মেট্রোরেলের কাজে বাউন্ডারি দেওয়ায় সংকুচিত হয়ে গেছে মূল সড়ক। এ ছাড়া এলাকায় ভেতরের অধিকাংশ রাস্তায় সংস্কার কাজ চলায় যানজটসহ নানা দুর্ভোগে পড়েছে মিরপুরবাসী।

Advertisement

মিরপুর এলাকায় অধিকাংশ রাস্তায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে নানা সংস্কার কাজ। শেওড়াপাড়া থেকে বৌ-বাজার হয়ে ষাটফিট পর্যন্ত রাস্তায় গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে সংস্কার কাজ। শেষ হতে আরও দেড় থেকে দুই মাস লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রাস্তার কাজ চলায় এ এলাকায় রিকশাও যাতায়াত করতে পারছে না। ফলে রাস্তায় খোঁড়া গর্ত, ইটের খোয়া, বালুর মধ্যে হেঁটেই চলাচল করছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ পুরো এলাকাবাসী।

শেওড়াপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন রিকশাযোগে ষাটফিট সংলগ্ন বাসায় ফেরেন বেসরকারি চাকরিজীবী সুমন আহমেদ। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, প্রতিদিন অফিস থেকে বাসে এসে শেওড়াপাড়া নামি। এরপর রিকশাযোগে ষাটফিটের বাসায় যাই। তবে গত এক মাস ধরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে হেঁটে যেতে হচ্ছে। রাস্তার কাজের জন্য এমন পরিস্থিতি হয়ে আছে যে, হেঁটেও যাওয়ার পরিবেশ নেই।

তিনি আরও বলেন, এতদিন বড় রাস্তার কাজ চললো, এখন শুরু হয়েছে পাড়া-মহল্লার ভেতরের রাস্তার কাজ। উন্নয়ন তো হতেই পারে কিন্তু উন্নয়নের নামে দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয় না।

Advertisement

পশ্চিম শেওড়াপাড়া বাসা মালিক আব্দুল মালেকের ৫তলা বাসার বেশ কয়েকটা ইউনিটে ভাড়াটিয়া নেই। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাস্তার কাজের জন্য এমন অবস্থা যে, নতুন ভাড়াটিয়ার তাদের মালামাল নিয়ে আসার অবস্থা নেই। গত মাসে ভাড়াটিয়রা বাসা দেখে গেছে কিন্তু রাস্তা কাজ হওয়ায় মালমাল নিয়ে আসতে পারবে না বলে জানিয়েছেন। ফলে বেশ কয়েকটি ইউনিট এখন ফাঁকা রয়েছে। আগামী দুইমাসেও এ রাস্তার কাজ শেষে হবে না বলে শোনা যাচ্ছে।

রাস্তার এমন অবস্থায় দু’পাশের অবস্থিত দোকানগুলোতেও ব্যবসায় মন্দা। রাস্তার পাশে দোকানদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, মিরপুরবাসীর কাছে ভোগান্তীর নাম রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। বড় রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি শেষে এখন ভেতরের রাস্তার চলছে। এমন পরিস্থিতিতে হেঁটে চলারও বুদ্ধি নেই। আমাদের ব্যবসায় লাটে উঠেছে।

এদিকে রাস্তার কাজের সংশ্লিষ্টরা জানান, এক মাস আগে কাজ শুরু করেছি। প্রথমে ড্রেনের লাইনের কাজ হয়েছে, এখন রাস্তার কাজ শুরু করা হবে। ইট ভাঙার কাজ চলছে। পুরো কাজ শেষ হতে আরও দেড় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। এতে মানুষের সাময়িক সমস্যা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু রাস্তার হয়ে গেলে সবাই খুব ভালোভাবে চালাচল করতে পারবে।

জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার মিরপুর জোনে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সাড়ে ৪শ’কোটি টাকার কাজ করছে ডিএনসিসি। এসব কাজের মধ্যে ২৯৮টি রাস্তা রয়েছে, যার ২৬২টির কাজ আংশিক ও কিছু রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া ৩৬টি রাস্তা অবৈধ দখলে থাকায় উচ্ছ্বেদের পর কাজ শুরু করা হবে।

Advertisement

এএস/আরএস/এমএস