দেশজুড়ে

খুলনায় আর্মড পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে আহত ২৫

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) প্লটে ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে স্থানীয় দৈনিক তথ্যে’র ফটো সাংবাদিক শান্ত ও দৈনিক প্রবর্তনের ফটো সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাকসহ ২০/২৫ জন আহত হয়েছেন।রোববার বিকেলে খুলনা মহানগরীর শিরোমনিস্থ এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের ফুলতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দু’বছর আগে শিরোমনি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন খুলনা সদর দপ্তরের পাশের ব্যবসায়ী মোড়ল আজিজুর রহমান কেডিএ’র ১৫ নং বাণিজ্যিক প্লট এর মধ্যে সোয়া ৪ কাঠা জমি ক্রয় করেন।  সেই প্লটে ৬ তলা ভবন নির্মাণের জন্য কেডিএ থেকে প্লান নিয়ে আজিজুর রহমান গত ১৮ জুন থেকে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এ সময় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের জনৈক কর্মকর্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে খানজাহান আলী থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আজিজুর রহমানের কাগজপত্র দেখে ফিরে যান। এরপর এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ওই কর্মকর্তার সাথে কথা বললে তিনি জানান, এই প্লট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের জন্য প্রপোজাল দেয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানকে এ বিষয়ে ১৫ দিনের সময় দেন। এরপর থেকে আজিজুর রহমান ঝামেলা এড়াতেই ১৫ দিনের জন্য নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন। ১৫ দিন পার হওয়ার পর শনিবার সকাল থেকে ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান তার প্লটে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। শনিবার দুপুর তিনটার দিকে হঠাৎ করে ১০০ জনের মতো আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ক্যাম্প থেকে বের হয়ে এসে হামলা চালায়। এসময় নির্মাণ শ্রমিকরা ভয়ে পালিয়ে গেলেও আজিজুর রহমান, মোড়ল সাহিদুর রহমান, মোড়ল মুজাহিদুর রহমান ও আনিসুর রহমান মোড়ল আহত হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বিকেলে শিরোমনি বাজারে স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে।  মিছিলটি আর্মড ব্যাটালিয়নের ফটকের কাছে গেলে আমর্ড পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ পরে তারা ফাঁকা গুলি চালায়।এ সময় আর্মড পুলিশের হামলার ছবি তুলতে গেলে দৈনিক তথ্যের ফটো সাংবাদিক শান্ত ও প্রবর্তনের ফটো সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাককে বেদম মারধর করে ক্যামেরা ভাঙচুর করে।এদিকে ইফতারের পর হাজার হাজার জনতা খুলনা-যশোর মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে অবস্থান নেয়। এ সময় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।এদিকে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আমর্ড ব্যাটালিয়নের এসপি হারুনের নেতৃত্বে স্থানীয়দের উপর হামলা চালানো হয়। তাদের হামলায় ২০/২৫ জন আহত হয়। এরমধ্যে ১০ জনকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা অশঙ্কাজনক বলে তিনি জানান।  তিনি বলেন, এসপি হারুনকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ অব্যাহত থাকবে।এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানা পুলিশের ওসি মো. নাসিম খান বলেন, একটি ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে আর্মড পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে বৈঠক চলছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।এদিকে সাংবাদিকের উপর পুলিশের হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি, মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, খুলনা ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট ইউনিটের সভাপতি গৌরাঙ্গ নন্দী ও সদস্য সচিব শাহ আলম, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম কাজল ও সাধারণ সম্পাদক মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ এবং খুলনা মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ার আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লা।আলমগীর হান্নান/এমএএস/আরআই

Advertisement