বিশেষ প্রতিবেদন

এককালে বিটিভির জনপ্রিয় উপস্থাপকের নাম আনিসুল হক

প্রায় বাইশ বছর আগের কথা। ১৯৯৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘জলসা’ নামে একটি বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান চলছে। ওই সময় বিটিভির ডাকসাইটে প্রযোজক নওয়াজেশ আলী খানের প্রযোজনায় একজন তরুণ উপস্থাপকের উপস্থাপনা ও গ্রন্থনায় অনুষ্ঠানটি শুরু হলো।

Advertisement

শুরুতেই উপস্থাপক বললেন, আজ যারা এখানে উপস্থিত আছেন তারা অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের স্বামী বা স্ত্রী। দর্শকরা দেখলেন, স্ক্রলে শিল্পী হিসেবে নাম ভেসে উঠলো কলিম শরাফী, মুস্তাফা মনোয়ার, খান আতাউর রহমান, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, নীলুফার ইয়াসমিন, সুবীর নন্দী, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সাদিয়া আফরিন মল্লিক, শাকিলা জাফর, সোলস, মাইলস, ফিডব্যাক ও রেনেসাঁ।

উপস্থাপক জানালেন, অনুষ্ঠানেও ভিন্নতা রয়েছে। তারা আজ এখানে যে গান গাইবেন হয়তো জীবনে হয়তো ওই গান গাননি। বলেই তিনি রেনেসাঁ ব্যান্ডের শিল্পী নকীব খানকে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে বললেন। এও বললেন, সাদিয়া আফরিন মল্লিক তারপর ব্যান্ডসঙ্গীত গাইবেন। এমনিভাবে শৈল্পিক উপস্থাপনা ও শিল্পীদের গানের মাধ্যমে দর্শককে টিভি সেটের সামনে মন্ত্রমুগ্ধের মতো বসিয়ে রাখেন।

সেই সফল উপস্থাপক আর কেউ নন, সদ্যপ্রয়াত ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক। সুদীর্ঘ প্রায় দুই যুগ আগে তিনি ছিলেন একজন ভীষণ জনপ্রিয় উপস্থাপক। ওই সময় একমাত্র বিটিভিই ছিল গ্রাম-শহর নির্বিশেষে তৎকালীন মানুষের বিনোদনের প্রধান মাধ্যম। ওই সময় আনিসুল হক নামের এক তরুণ উপস্থাপক দর্শকপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন। ঈদসহ বিভিন্ন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক বলতেই যে কজনার নাম উঠে আসতো তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন আনিসুল হক। সুদর্শন সেই যুবকের বাচনভঙ্গি, ভরাট কণ্ঠস্বর ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উপস্থাপনা সকলের মন কেড়ে নিতো।

Advertisement

সেই সফল গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব পরবর্তীতে ব্যবসায় নেমেও সফলতা পান। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ একাধিক সংগঠনের শীর্ষ কর্মকর্তা ও সর্বশেষ ডিএনসিসির মেয়র নির্বাচিত হন। উপস্থাপনা ছেড়ে দিলেও যেকোনো অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠে বক্তব্য শুরু করলেই মানুষ মন্ত্রমুগ্ধের মতো তার বক্তব্য শুনতেন।

প্রকৃতির অমোঘ নিয়মিত মৃত্যু। ২২ বছর আগে জলসা নামক বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠানে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই আজ বেঁচে নেই। বৃহস্পতিবার রাতে সেই মৃত্যুর মিছিলে সহযাত্রী হলেন এককালের সফল উপস্থাপক আনিসুল হক।

এমইউ/বিএ

Advertisement