দেশজুড়ে

গোটা যশোর পৌর এলাকাই যেন আবর্জনার ভাগাড়!

গোটা যশোর পৌর এলাকাই যেন ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। শহরে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় যেখানে খুশি সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলছেন শহরবাসী। এই ময়লা শহরময় ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকাকেই অপরিচ্ছন্ন করে তুলেছে। কিন্তু এ দিকে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কম। তাই ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধকে সঙ্গী করেই জীবনযাপন যশোরবাসীর। যশোর পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকায় ৯টি ওয়ার্ডে এখন ডাস্টবিন রয়েছে ৪৮টি। বছরখানেক আগেও এর সংখ্যা ছিল ১৩০টি। বিভিন্ন সময়ে ৮২টি ডাস্টবিন ভেঙে ফেলেছে এলাকাবাসী। ফলে সেগুলোর আর অস্তিত্ব নেই। সরেজমিনে পৌর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাড়া-মহল্লার রাস্তা থেকে শুরু করে মহাসড়কের পাশে জমে রয়েছে ময়লার স্তুপ। যে কয়েকটি ডাস্টবিন রয়েছে সেগুলোও ব্যবহার না করে যত্রতত্র ময়লা ফেলা হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে জমে থাকা আবর্জনায় গবাদি পশু, কুকুর, কাক বিচরণ করে ময়লার স্তুপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে। ফলে একটু বাতাস হলেই চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নাক চেপে চলাফেরা করছেন পথচারীরা। আবার ডাস্টবিনের অভাবে বসত বাড়ির আশপাশের ড্রেনেও যাবতীয় ময়লা ঢালছেন অনেকে। ফলে শহরের অধিকাংশ ড্রেন ভরে গেছে ময়লা-আবর্জনায়। তাই বৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় তা জলাবদ্ধতায় রূপ নিচ্ছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে খানা-খন্দে ভরা শহরের কিছু এলাকার রাস্তা পানিতে থৈ থৈ করছে। একদিকে রাস্তায় পানি, আরেক দিকে ডাস্টবিনের ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত কাদা-পানিকে সঙ্গী করেই চলাচলে বাধ্য হচ্ছেন শহরের মানুষ। যশোর শহরের কেন্দ্রে থাকা কোতোয়ালি মডেল থানার সামনে, চিত্রা মোড়ের গোহাটা রোডের উপর, রেলগেট ডোমার হোটেলের পাশে, রেলগেট জামে মসজিদের সামনে, জিলা স্কুলের সামনে, ইনস্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরি ও কালেক্টরেট স্কুলের পাশে, লোহাপট্টি রোডসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় এমন দৃশ্য চোখে পড়ছে।রেলগেট এলাকার বাসিন্দা তৌহিদুল আজীম, মনিরুজ্জামান লিখন, ফিরোজ হক, গৃহবধূ রেহেনা বেগম, স্কুল শিক্ষক আজিজুর রহমানসহ আরো অনেকে অভিযোগ করে জানান, পুরো এলাকায় একটিমাত্র ডাস্টবিন। সেটির অবস্থান রায়পাড়া প্রাইমারি স্কুলের পাশে, যে কারণে অনেকে ড্রেনে ময়লা ফেলছেন। আবার অনেকে ফেলছেন রাস্তায়। পৌরসভার ময়লা অপসারণের গাড়ি নিয়মিত না আসায় রাস্তায় আবর্জনার স্তুপ জমছে। এদিকে, রায়পাড়া প্রাইমারি স্কুলের পাশের বাসিন্দা মোহাম্মদ রেজা জানান, স্কুলের পাশে ডাস্টবিন না থাকলেও সেখানে আবর্জনা রাখায় গন্ধে রাস্তায় হাঁটা যায় না। যশোর জিলা স্কুল আঙিনায় কথা হয় গৃহবধূ শারমিন আক্তার ও তার ছেলে স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র রিয়াজের সঙ্গে। তারা জানান, জিলা স্কুলের সামনের ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে যাবার সময় গা গুলিয়ে আসে।এ বিষয়ে আলাপকালে পৌর সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুম জাগো নিউজকে বলেন, শহরের এমন অবস্থায় আমরা বিব্রতকর অবস্থায় আছি। পরিবহন ও অর্থ সঙ্কটের কারণে নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ করা যাচ্ছে না। বর্জ্য অপসারণের কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি গাড়ি নষ্ট রয়েছে। আর গাড়িগুলো বেশ পুরনো। যার কারণে বার বার নষ্ট হয়। তিনি আরো জানান, মাত্র ৪টি নতুন গাড়ি থাকলে শহর ঝকঝকে তকতকে রাখা কোন ব্যাপার নয়।আসন্ন বাজেটে নতুন করে ডাস্টবিন নির্মাণের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, ডাস্টবিন নির্মাণ করতে চাইলেও জায়গার সঙ্কটের কারণে নির্মাণ সম্ভব হয় না। কারণ কেউ এ কাজে জায়গা দিতে চান না। আবার অনেক সময় ডাস্টবিন ভেঙে ফেলা হয়। তবে এ কাজে বাজেট বরাদ্দ থাকছে। মিলন রহমান/এমজেড/এমআরআই

Advertisement