বিশেষ প্রতিবেদন

হার্ট ভাল্ব পেসমেকারের মূল্য নির্ধারণ করছে সরকার

হার্ট স্ট্যান্টের (রিং) পর এবার হার্ট ভাল্ব ও পেসমেকারের মূল্য নির্ধারণ হচ্ছে। জটিল হৃদরোগের অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসায় বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ৫৮ প্রকারের পেসমেকার, ৮ প্রকারের হার্ট ভাল্ব ও ২ প্রকারের অ্যামপ্লাটজার সেপটাল ওকিউলার (এএসডি)সহ মোট ৬৮ প্রকারের মেডিকেল ডিভাইস ব্যবহৃত হলেও শুধুমাত্র এক প্রকারের এএসডি ছাড়া সরকারিভাবে কোনো ডিভাইসের রেজিস্ট্রেশন নেই।

Advertisement

শুধু তাই নয়, আমদানিকৃত এসব ডিভাইস প্রকারভেদে সর্বনিম্ন ৬৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৪ লাখ টাকা দামে বিক্রি হলেও এগুলোর দামের ওপর এতদিন সরকারি কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। হাতেগোনা কয়েকটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লোকাল এজেন্টরা ইচ্ছেমাফিক দামে বছরের পর বছর বিভিন্ন ধরনের মেডিকেল ডিভাইস বিক্রি করে আসছিল।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সম্প্রতি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর হৃদরোগের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত হার্ট স্ট্যান্ট (রিং) এর দাম নির্ধারণ করা হয়। ২২টি প্রতিষ্ঠানের ৫১ প্রকারের স্ট্যান্টের দাম বেঁধে দেয়ার কারণে ইতিমধ্যেই স্ট্যান্টের দাম কমে এসেছে। তবে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল বেঁধে দেয়া দামে স্ট্যান্ট বিক্রি হলেও অস্ত্রোপচার ও বিভিন্ন ধরনের চার্জের নামে টোটাল প্যাকেজ হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ এখনও আদায় করছে বলে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, স্ট্যান্টের পর এবার হার্ট ভাল্ব ও পেসমেকারের দাম কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রায়শই বিনামূল্যে এ দুটি জীবনরক্ষাকারী ডিভাইস সাহায্যে হিসেবে দেয়ার জন্য আবেদন আসে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের অর্থে কেনা এ দুটি ডিভাইস সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দরিদ্র রোগীদের সরবরাহ করা হয়।

Advertisement

বিভিন্ন সূত্রে প্রধানমন্ত্রী জানতে পারেন হৃদরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হার্ট ভাল্ব ও পেসমেকার আমদানির ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। সরকারিভাবে দামও নির্ধারণ করা নেই। এ কথা শুনেই তিনি স্ট্যান্টের মতো দাম নির্ধারণের নির্দেশনা দেন।

হার্ট ভাল্ব ও পেসকারের মূল্য নির্ধারণের লক্ষে আজ (মঙ্গলবার) ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের উদ্যোগে মহাখালীর কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পেসমেকার ও হার্ট ভাল্ব আমদানিকারক ও লোকাল এজেন্টদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভার সভাপতি তাদের কাছ থেকে বর্তমানে বাজারে বার্ষিক পেসমেকার ও হার্ট ভাল্ব এর চাহিদা ও দাম সম্পর্কে জানতে চান।

ব্যবসায়ীরা জানান, স্ট্যান্টের মতো পেসমেকার ও হার্ট ভাল্বের চাহিদা নেই। বর্তমানে বছরে ১ হাজার ২শ’ হার্ট ভাল্ব ১ হাজার ৮শ’ পেসমেকারের চাহিদা রয়েছে। চাহিদা কম থাকায় অনেক সময় ডিভাইস অবিক্রিতও থেকে যায় বলে জানান তারা।

ওষুধ প্রশাসনের ডিজি জানান, আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে দাম নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া সব প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রেশন করা হবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ কোনো মেডিকেল ডিভাইস বিক্রি করতে পারবে না বলেও জানান তিনি।

Advertisement

এমইউ/এসএইচএস/আইআই