রাজধানীর বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আলম মিয়া। সোমবার বকশিবাজারের সামনে থেকে পায়ে হেঁটে মতিঝিলের অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন। হাইকোর্টের বিপরীতে শিক্ষাভবন সংলগ্ন বিশাল সিগন্যালের সামনে ‘পারমাণবিক যুগে বাংলাদেশ’ লেখা একটি বিশাল বিলবোর্ড দেখে থমকে দাঁড়ান।
Advertisement
নিচু গলায় দু’চারজন পথচারীকে কিছু একটা জিজ্ঞাসা করে আবার হাঁটতে শুরু করেন। শিক্ষাভবন থেকে রেলভবন হয়ে সচিবালয় পর্যন্ত আর বার দুয়েক থেকে থেমে ওই একই লেখা বিলবোর্ড ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দেখেন।
শেষে একজন পথচারীর মুখে শুনেন, দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ৩০ নভেম্বর উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষে হাইকোর্ট ও সচিবালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ‘পারমাণবিক যুগে বাংলাদেশ’ লেখা একাধিক বিলবোর্ড, ব্যানার ও পোস্টার লাগানো হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩০ নভেম্বর পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন। ওইদিন এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রিয়াক্টর ভবনের প্রথম কংক্রিট ঢালাইয়ের মাধ্যমে মূল কাজের উদ্বোধন হবে। এ প্রকল্পের কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্ব পরমাণু ক্লাব’ (নিউক্লিয়ার নেশন)-এ যুক্ত হবে। বাংলাদেশ হবে এ ক্লাবের ৩২তম দেশ। বর্তমানে বিশ্বের ৩১টি দেশে ৪৫০টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট চালু আছে।
Advertisement
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিক সহায়তা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থা আণবিক শক্তি কর্পোরেশন-রোসাটম এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এএসই গ্রুপ অব কোম্পানিজ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয়ের ৯০ শতাংশ ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া। এ প্রকল্পে রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বাধুনিক থ্রি প্লাস জেনারেশন ‘ভিভিইআর ১২০০’ প্রযুক্তির পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট স্থাপন করা হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে।
আগামী ২০২৩ সালে এর প্রথম ইউনিট এবং পরের বছর ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হওয়ার কথা। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে টানা ৬০ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এছাড়া এ প্রকল্পে ভবিষ্যতে আরো দুটি ইউনিট করার পরিকল্পনা রয়েছে। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জায়গায়ও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
এমইউ/এআরএস/এমএস
Advertisement