দেশজুড়ে

কদর বাড়ছে ঠাকুরগাঁওয়ের সূর্যাপুরি আমের

খেতে সুস্বাধু হওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের সূর্যাপুরি আমের কদর দিন দিন বাড়ছে। এমন সুস্বাধু আম কম দামে পাওয়ায় ব্যস্ত এখন ক্রেতারা। সেই সাথে জমজমাট হয়ে উঠছে আমের হাট-বাজারগুলোও।প্রতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁও রোড যুব সংসদ মাঠে সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজারে আম বিকিকিনিতে ব্যস্ত থাকে স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকাররা। সুর্যাপুরি আমের পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে, মিশ্রিভোগ, আম রূপালি, ন্যাংড়াসহ কয়েক জাতের আম। তবে এ জেলার সুর্যাপুরি আমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এখনকার বাজার দরে সুর্যাপুরি ৯শত থেকে ১ হাজার, আম রূপালি ১১শ থেকে ১২শ, ন্যাংড়া ১৩শ থেকে ১৪শ আর মিশ্রিভোগ ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সুর্যাপুরি আম মিষ্টি ও টক বলে এ আমটি দেশের বাজারে অত্যন্ত জনপ্রিয় বলেই এর চাহিদা অনেক। জয়পুরহাট, রাজশাহী, নাটোর ও বগুড়াসহ কয়েকটি জেলার পাইকাররা এখানে আম বেচাকেনা করছে। এখান থেকে প্রতিদিন কয়েক টন আম পাঠিয়ে দিচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী, চাষি, ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরাও বেশ লাভবান হচ্ছেন। আবার অন্যান্য জেলার ব্যবসায়ী এ জেলা বাগানে মুকুল আসার আগেই আকারভেদে বাগান ক্রয় করে অধিক মুনাফা অর্জন করছে। এতে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় বাগান মালিকরা। আর সেই সাথে সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন কর্মসংস্থানেরও। জয়পুরহাট ও সিরাজগঞ্জ থেকে আসা পাইকার রহমত আলী ও হেলাল উদ্দিন জানান, প্রতি মৌসুমে আমরা ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আম পাঠাই। এ জেলার সুর্যাপুরি আম অন্যান্য জেলার আমের চেয়ে স্বাদে একদম আলাদা তাই এখানকার আমের চাহিদাও অনেক। এছাড়া দাম অনেক কম ও কেজিতে ৬ থেকে ৮টি আম পাওয়া যায়। তাই ক্রেতারাও খুশি। আমরা “শ” হিসেবে আম ক্রয় করি বর্তমান বাজার দরে ১শ আম ৩শ টাকায় ক্রয় করছি। আর এই ১শ আম দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছি অন্যান্য জেলায়। এতে আমরা বেশ লাভবান। আর নাটোর ও রাজশাহী থেকে আসা মকবুল হোসেন ও শাহাজান আলী জানান, বাগানে ফল আসার আগেই আমরা আকারভেদে স্থানীয় বাগান মালিকদের কাছে ২লাখ থেকে ১২ লাখ টাকায় ফল ক্রয় করি। বাগান রক্ষণাবেক্ষণে নিয়মিত ২০ থেকে ৫০ জন শ্রমিক প্রতিটি বাগানে কাজে লাগাতে হয়। এতে শ্রমিকদেরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। আর বাগানের উৎপাদিত ফল বিক্রি করে আমরাও লাভবান। তবে বাগান ক্রয়ে এখনো কোন ব্যবসায়ী লোকসানে পরেনি। স্থানীয় বাগান মালিক আব্দুল লতিফ ও খোদা বকস্ ডাবলু জানান, বাগানে মুকুল আসার আগেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে বাগান ক্রয় করেন। আমরাও বাগান রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পেরে আগেই বাগানের ফল বিক্রি করে দেই। এতে আমরা বেশ লাভবান হয়ে থাকি। জেলার কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, এ অঞ্চলের চাষিরা ফলের বাগান করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। আর এ কারণে জেলায় নতুন নতুন আম বাগান গড়ে উঠছে পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা লাভবান ও শ্রমিকদেরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।জেলার সদর, বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর, পীরগঞ্জসহ ৫ উপজেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ১৫১৪টি আম আবাদ রয়েছে। গত মৌসুমে এ জেলা থেকে উৎপাদন হয় সাড়ে ৬১ হাজার মে.টন আম।রবিউল এহসান রিপন/এসএস/এমএস

Advertisement