মাত্র ৩০ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন, নৃশংস এবং বর্বরোচিত ঘটনা বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনায় করা হত্যা মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন এবং আসামিপক্ষের খালাস চেয়ে করা হাইকোর্টে আপিলের রায়ে এ কথা বলা হয়েছে।
রায়ে আরও বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মারা গিয়েছিলেন ৫৫ জন সেনা। ১৯৬৭ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ৭ দিনের বিদ্রোহে মারা গিয়েছিলেন ১০০ জন, আফ্রিকায় মারা যান ১৭ জন।
রোববার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে রায় পড়া শুরু হয়। প্রথমে বিচারপতি মো. শওকত হোসেন রায়ের পটভূমি ইংরেজিতে পাঠ করেন এবং পরে বেঞ্চের অপর জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী বাংলায় রায় পড়ছেন।
Advertisement
বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের সঙ্গে বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার। এ রায় ঘিরে সকাল থেকে হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
আসামিসংখ্যার দিক থেকে এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ওই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন। আজ হাইকোর্টের রায়ের মধ্যে দিয়ে মামলাটির বিচারপ্রক্রিয়ার দু’টি ধাপ শেষ হতে যাচ্ছে।
এই মামলায় আসামি ছিলেন ৮৫০ জন। সাজা হয় ৫৬৮ জনের। তাদের মধ্যে বিচারিক আদালতের রায়ে ১৫২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। খালাস পেয়েছিলেন ২৭৭ জন।
এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) হাইকোর্টে আসে। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডিতরাও জেল আপিল ও আপিল করেন। আর ৬৯ জনকে খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।
Advertisement
এসবের ওপর ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়, শেষ হয় ৩৭০তম দিনে গত ১৩ এপ্রিল। সেদিন শুনানি শেষে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। এরপর হাইকোর্ট রায়ের জন্য ২৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
এআর/এফএইচ/জেইউ/এনএফ/জেআইএম