প্রতিবছর ঈদ এলে দর্জিপাড়ায় ব্যস্ততা বেড়ে যায়। সকাল থেকে সেহরি পর্যন্ত চলে তাদের কাপড় কাটা আর সুই সুতা দিয়ে সেলাইয়ের কাজ। এছাড়া নগরের দু`একটি থান কাপড়ের দোকানে কাপড় ক্রয় করলে সেলাই ফ্রি অফার দিয়ে রেখেছে। ফলে ওই দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা।দর্জিপাড়ায় সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরের দর্জির দোকানগুলোতে কেউ মাপ-যোগ নিচ্ছেন। আবার কেউ কাপড় কাটছেন, কেউবা সেলাইয়ে মহা ব্যস্ত। কারো সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ নেই। ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসাও জমেছে ভালোই।নগরের জিন্দাবাজারের সানমুন টেইলার্সের কারিগর পলাশ জাগো নিউজকে জানান, প্রথম রমজান থেকে অর্ডার আসতে শুরু করেছে। এখন ১৫ রমজানে এসে তো অনেক বেড়ে গেছে। তবে আগামি ২০/২২ রমজানের পর আর অর্ডার নেয়া সম্ভব হবে না। কারণ, যে পরিমাণ অর্ডার পাওয়া গেছে সেগুলো ঠিকটাক মতো করে ডেলিভারি দিতে শেষ রমজান পর্যন্ত সময় লাগবে।সিলেট নগরের অভিজাত এলাকা জিন্দাবাজারের বেশ কয়েকটি কাপড়ের দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি থান কাপড়ের দোকানেই ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। ক্রেতাদের চাহিদামতো কাপড়ের যোগান ও নিত্য নতুন বাহারি রংয়ের কাপড়ের সম্ভার সাজিয়েছেন বিক্রেতারা।দর্জি বাড়ির কাপড় ও শপিংমলের কাপড়ের মধ্যে দামে কিছুটা তফাৎ রয়েছে। তবে বেশির ভাগ দোকানেই দর-দাম করে কেনা যাবে।জিন্দাবাজারে অবস্থিত থান কাপড়ের দোকানগুলোর মধ্যে নিনিশা ফেব্রিকস, মাস্টার টেইলার্সস, রিড অ্যান্ড টেইলার্স এ প্রতি পিস শার্টের থান কাপড় কেনা যাবে ৪০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি পিস প্যান্টের কাপড় কেনা যাবে ৫০০-৩০০০ টাকায়। প্রতি পিস পাঞ্জাবির কাপড় কেনা যাবে ৪০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত।এসব দোকানগুলোতে চাইলে পোষাক তৈরিও করা যাবে। প্রতি পিস শার্ট তৈরির খরচ পড়বে ৩০০-৩৫০ টাকা। প্রতি পিস প্যান্ট তৈরিতে খরচ পড়বে ৪০০ টাকা (নরমাল)। প্রতি পিস গ্যাবাডিন প্যান্ট তৈরিতে খরচ পড়বে ৫০০ টাকা। এছাড়া পাঞ্জাবি তৈরিতে মজুরি পড়বে ৫০০ টাকা। তবে দোকানভেদে এর ধরণেও কিছুটা তারতম্য রয়েছে।রিড অ্যান্ড টেইলার্সের বিক্রয় কর্মী মো. শামীম জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের ব্যস্ততা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ৩ রমজান থেকে। কাপড় বিক্রিও ভালো। সকাল থেকে সেহরি পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে। তবে পোশাক তৈরি করতে চাইলে আমাদের এখানে ২০ রমজানের মধ্যেই অর্ডার দিতে হবে।তুলনামূলক কম দামে কাপড় ক্রয় করা যাবে নগরের শুকরিয়া মার্কেটে। এছাড়া এ মার্কেটে বেশ কিছু দর্জির দোকান থাকায় এখানেও পছন্দমতো পোষাক তৈরি করা যেতে পারে। এ মার্কেটে শার্টের থান কাপড় কেনা যাবে সর্বনিম্ন ২৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত। প্যান্টের কাপড় ৩৫০-১০০০ টাকা পর্যন্ত। পাঞ্জাবরি কাপড় কেনা যাবে ৩০০-৭০০ টাকায়।শুকরিয়া মার্কেটে থান কাপড় ক্রয় করতে আসা আজিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর ঈদে আমি কাপড় কিনে শার্ট বানাই। এখানে দরদাম করে কেনা যায় বলে সবসময় আমি এ মার্কেট থেকে কাপড় কিনি।শুকরিয়া মার্কেটের তুরণ টেইলার্সের সত্বাধিকারী তুরণ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় পহেলা রমজান থেকেই ভাল অর্ডার পাচ্ছি। আশা করি, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর আরো ভালো ব্যবসা করতে পারবো।নগরের জিন্দাবাজারে অবস্থিত দর্জিবাড়ির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাহিদ ভূইয়া জাগো নিউজকে বলেন, সিলেটে দর্জির দোকানগুলোর মধ্যে আমাদের এখানেই কেবল ক্যাটালগ শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবি পাবেন। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইনিংয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে।তিনি জানান, ১৩ রমজান থেকে এখান থেকে যে কেউ ফেব্রিকস ক্রয় করে ফ্রি সেলাইয়ের সুযোগ নিচ্ছেন। এ অফার ২৬ রমজান পর্যন্ত চলবে।এমজেড/আরআই
Advertisement