কৃষি ও প্রকৃতি

নজর কাড়ছে মহাসড়কের গাছপালা

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দু’পাশে গাছের সারির সৌন্দর্য পথচারী ও যাত্রীদের নজর কাড়ছে। মেজর এমএ জলিল সেতুর পশ্চিম পাশ থেকে জয়শ্রী (আটিপাড়া রাস্তার মাথা পর্যন্ত) ৪ কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সামাজিক বনায়নের আওতায় ১১ হাজার গাছ রোপণ করে বনবিভাগ।

Advertisement

দক্ষিণ অঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম এ সড়কে গাছের সারি ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলেই বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে মুখরিত জনপদটি এক অনন্য দৃশ্য ধারণ করে। নান্দনিক এ অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেকেই ক্ষণিকের জন্য হলেও গাড়ি থামান। এছাড়া গাছের সারির কারণে প্রখর রোদে পথচারী ও কৃষকদের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ হয়েছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সিআরপিএআর প্রকল্পের আওতায় সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে ২৬ প্রজাতির ফলদ, বনজ ও ওষুধি বৃক্ষ রোপণ করা হয়। এর মধ্যে মেহেগনি, রেইনট্রি, আকাশমণি, শিশু, চাম্বুল, ইপিল-ইপিল, পিকরাশি, তেলসুর, পাহাড়ি নিম, বট, পাপড়ি, আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, কামরাঙ্গা, জলপাই, আমলকি, বিলাতি গাব, অর্জুন, উলটকম্বল, লটবিপল, দেশি নিম, শিমুল, ডেউয়া, বকুল, কাঞ্চন, তেুঁতলসহ ৫৫০টি তালগাছ রোপণ করা হয়। এতে স্থানীয়দের মধ্য থেকে ১১০ জন উপকারভোগী সদস্য রয়েছে।

বৃক্ষরোপণকালে সিআরপিএআর প্রকল্পের আওতায় আড়াই বছর প্রতি ১ হাজার চারার পরিচর্যা ও পাহারার জন্য ১ জন করে মোট ১১ জন পাহারাদারকে ৬ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে ৫৫ জন উপকারভোগীকে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রকল্প এলাকার আশপাশের ৬টি গ্রামের ১১০ জন দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উত্তরণ নামক এনজিও’র মাধ্যমে বিকল্প জীবিকায়নের জন্য সবজি চাষ, ফলের চারা রোপণ, হাঁস-মুরগি পালন, সঞ্চয় জমা করার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

Advertisement

বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, বন বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় উপকারভোগী সদস্য এবং জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় গাছগুলো এখন বেশ বড় হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে বনবিভাগের সচিব, প্রধান বনরক্ষক, বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা স্থানটি পরিদর্শন করে প্রশংসা করেছেন। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত সামাজিক বনায়নের গাছ কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। বিক্রিত অর্থ সামাজিক বনায়ন বিধিমালা অনুযায়ী বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।

সাইফ আমীন/এসইউ/জেআইএম