রানী এলিজাবেথের ইচ্ছায় তৈরি করা এক নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের নিদর্শন ভার্জিনিয়া ওয়াটার লেক। এই কৃত্রিম লেক দেখতে হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সাউথ হল এলাকা ধরে ৩০ মাইল গাড়ি চালিয়ে যেতে হয়। রঙিন পাতা বিছানো মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা গাছ, হ্রদে ভেসে বেড়ানো বিরল প্রজাতির হাস, পাখি আর উন্মুক্ত বনে হরিণের পাল দেখে অভিভূত হন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আশা পর্যটকরা। প্রকল্পটি রানীর মালিকানাধীন বলে এখানে প্রবেশ করতে কোনো প্রকার ফি লাগে না।
Advertisement
জানা যায়, এক সময় রানীর পরিবারের বেড়ানোর জন্য তৈরি করা হলেও নৈসর্গিক হ্রদটি এখন সবার জন্যে উন্মুক্ত। বিশাল হ্রদটির নাম ভার্জিনিয়া ওয়াটার। শান্ত চোখের এক মায়াময় জলের বিশুদ্ধতায় সৌন্দর্য মিশে গেছে নামের সঙ্গে। এটি এখনও বৃটেনের অহঙ্কার হিসেবে পরিচিত। উঁচু উঁচু সব বৃক্ষের ভেতর দিয়ে প্রশস্ত পাথরঢালা পথ চলে গেছে। মায়াময় হ্রদ পাশে আঁকাবাঁকা রাস্তা। চত্বর কেন্দ্রে একটি উঁচু খুঁটি, তাতে বিবিধ টোটেম চিহ্ন আঁকা, পরে জেনেছি এর নাম টোটেম পোল। সেখানে বনের ভেতর একটি ছোট স্ন্যাকস ও চা কফির দোকানে বিশ্রামের জন্য অনেকে ক’মিনিট বসেন আবার হাঁটেন। পথচারী যেন রাস্তা হারিয়ে না ফেলেন তার জন্য বিভিন্ন মোড়ে দিকনির্দেশনা টাঙানো আছে।
বিশালাকৃতির তীরচিহ্নের গায়ে লেখা ডিয়ার পার্ক। সঙ্গে দূরত্ব লেখা দুই দশমিক ২৫ মাইল। স্থানটিতে গিয়ে মনে হয়েছে এক জগতের সব সুন্দর হরিণগুলো ধরে এখানে ছাড়া হয়েছে। খোলা রাস্তায় দৌড়াদৌড়ি করছে। মানুষ দেখলেই দৌড়ে বনে পালিয়ে যায়।
কোনো ভিড় নেই, নেই শব্দদূষণ। কান পাতলে শোনা যায়, শুধু পানি গড়ানোর শব্দ আর না দেখা পাখির ডাক। দর্শণার্থীরা সেখানে গোটা জলপ্রপাতের দৃশ্য দেখে আর হেঁটে বেড়ায় মনের আনন্দে। সেন্ট্রাল লন্ডন থেকে দুই ঘণ্টার রাস্তা হলেও ইস্ট লন্ডন থেকে এক ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে পৌঁছা যায় ভার্জিনিয়া ওয়াটারে।
Advertisement
সেখানে দেখা হয় বাংলাদেশি বংশদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। হ্রদ সম্পর্কে তিনি জাগো নিউজকে জানান, এখানে প্রবেশ করতে কোনো প্রকার টিকিট কিনতে হয় না। রানীর পরিবারের জন্যে তার নিজের নির্দেশনায় এই হ্রদটি করা হয়। এটি তাদের কোনো আয়ের প্রকল্প নয়। শুধু নিয়ম মেনে চললে ভোর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই হ্রদে বেড়ানো যায়।
হ্রদে আসার অনুভূতি জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের সিকাগো থেকে আসা ছাত্র রিক্কো ইউলিয়াম জাগো নিউজকে বলেন, চমৎকার। কেবল বেড়ানো নয়, এর ইতিহাস আর বৈশিষ্ট জানার আগ্রহ থেকে এখানে আসা।
আলম নামে এক বাংলাদেশি বলেন, অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। সব সুন্দরের শেষ থাকলেও ভার্জিনিয়া ওয়াটারের সৌন্দর্যের শেষ নেই। সকালে এসেছি, বেলা শেষ হয়ে আসছে, শুনলাম এখনও অর্ধেক দেখা হয়নি। আর একদিনে এটি দেখে শেষ করার মতো নয়।
আরএম/জেডএ/এমএস
Advertisement