তিস্তার নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে শনিবার সকাল থেকে আবারো বিপদসীমা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। গত বুধবার বিকেল ৩টা থেকে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। শুক্রবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ২৪ ঘণ্টা পর শনিবার সকাল থেকে আবারো ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী গ্রামের স্বপন মাটির বাঁধটিতে প্রবল ভাঙন দেখা দেয়ায় চরম হুমকির মুখে পড়েছে।সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টের পানি ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মর্মে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্ক কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়। তিস্তা অববাহিকায় ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিস্তা পাড়ের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির জন্য চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ভোগান্তি কমেনি। সরকারিভাবে কোনো ত্রান বিতরণ করা হয়নি। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থার চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো বাড়িতে ফিরে গেলেও অনেকের রান্না ঘর পানিতে তলিয়ে রয়েছে। চরাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ির কাঁচা ল্যাট্রিন বন্যার তোড়ে ভেষে যায়। নলকূপগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ত্রাণ সামগ্রীর অভাবে খাদ্য সঙ্কটে পড়েছেন ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খালিশা চাপানী, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, ছাতুনামা, বাঘের চর, ঝাড়সিংহেশ্বরের নিম্নাঞ্চল এবং চরবাসী। খাদ্য সঙ্কটের কারণে ত্রাণ দিতে হিমশিম খাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা।টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী গ্রামের স্বপন বাঁধের ২০০ মিটার মাটির বাঁধটিতে প্রবল ভাঙন দেখা দেয়ায় চরম হুমকির মুখে পড়েছে। তিস্তার দুর্গম এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার, খাবার পানি ও পয়নিষ্কাশনে চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জাগো নিউজকে জানান, পূর্ব খড়িবাড়ী গ্রামের স্বপন বাঁধটি চরম হুমকিতে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে বাঁধটি পাইলিংসহ সিসি ব্লক না দিলে ৩টি গ্রামে তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে পড়বে। ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জাগো নিউজকে জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ১০ মেট্রিকটন খয়রাতি চাল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা পাওয়া মাত্র জেলা প্রশাসনকে ত্রাণ সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, শনিবার সকাল ৬টায় ও ৯টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।জাহেদুল ইসলাম/এমজেড/এমএস
Advertisement