কুমিল্লা সওজ কর্তৃপক্ষ সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার মধ্য দিয়ে বিকল্প সড়ক মেরামত না করেই রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ শুরু করায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রায় ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা মহানগরীর শাসনগাছায় রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়ে গত এক মাস যাবৎ রেলওয়ে ওভারপাস প্রকল্পের কাজ চলছে। কিন্ত পাশের বিকল্প সড়কগুলো মেরামত না করেই ওই প্রকল্প এলাকার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে কাজ চলমান রাখায় নগরীর ব্যস্ততম ওই সড়কে যাতায়াতকারী লোকজনের এখন ত্রাহি দশা। জানা যায়, কুমিল্লা মহানগরীর শাসনগাছা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে নগরীর রেইসকোর্স পর্যন্ত রেলওয়ে ওভারপাস নির্মিত হচ্ছে। বর্তমানে এর রিক পাইলিংয়ের কাজ চলছে। ২০১৬ সালের ৩০ জুন এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। শাসনগাছা রেলক্রসিং দিয়ে প্রতিদিন ৭০টির মতো ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া কুমিল্লা জেলার আওতাধীন পশ্চিম এবং উত্তর দিকে অবস্থিত বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার অধিকাংশ জনগণ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। অপরদিকে শাসনগাছা বাস স্টেশন থেকে বর্তমানে ঢাকা-কুমিল্লা, কুমিল্লা-সিলেট সড়কসহ আঞ্চলিক সড়ক সমূহের বাস, মিনিবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করে। কিন্তু বাস স্টেশনের জন্য বিকল্প কোনো স্থানের ব্যবস্থা না করে বর্তমানে ওই প্রকল্পের কাজ চলায় যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এছাড়াও আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে বাস স্টেশনের সামনের অংশে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হলে যানবাহন চলাচলে আরো নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, ওভারপাসের কাজ শুরুর আগে বিকল্প অস্থায়ী বাস স্টেশন এবং বিকল্প সড়ক হিসেবে পাশের ধর্মপুর- সাতোরা-কান্দিরপাড় সড়ক মেরামতে সওজ কর্তৃপক্ষ সিটি কর্পোরেশন এবং জেলা পরিষদের সঙ্গে সমন্বয় না করায় জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। তাই প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাশের বিকল্প সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ সামলাতে ওই সড়ক সচল রাখার দাবি পরিবহন নেতাদের। বর্তমানে ওই বিকল্প সড়কটি যানবাহন চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব মো. তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, এতো বড় একটি প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে সওজ কর্তৃপক্ষ পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের কোনো মতামতই আমলে নেয়নি। তাই প্রকল্পের কাজ শুরুর পর থেকেই যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে কুমিল্লা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সাইফ উদ্দিন জাগাে নিউজকে জানান, শিগগিরই সওজ, সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিকল্প সড়কগুলো মেরামত করা হবে। এছাড়াও জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওভারপাস প্রকল্প শেষ করতে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, পিসি গার্ডার টাইপের এ রেলওয়ে ওভার পাসের দৈর্ঘ্য ৬৩১.২৬৫ মিটার, প্রস্থ ৮.৯৫ মিটার (২-লেন বিশিষ্ট), র্যা ম্প ১৭৮.৭৪ মিটার। এতে ২৪টি স্প্যান ও ২৩টি পিলার নির্মাণ করা হবে। চলতি বছরের গত ২৮ জানুয়ারি এ প্রকল্পের কার্যাদেশ দেয়া হয় এবং ২০১৬ সালের ৩০ জুন এ প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে বলে সওজ সূত্রে জানা গেছে। মো. কামাল উদ্দিন/এমজেড/এমএস
Advertisement