জাতীয়

সুন্দরভাবে চামড়া জোড়া লাগছে মুক্তামণির

হাতে রক্তনালির টিউমারে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থতার স্বপ্ন নিয়ে সপরিবারে ঢাকায় আসা। স্বপ্ন পূরণের পথে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে মুক্তামণি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের নিরলস প্রচেষ্টায় অনেকটা ভালোর পথে মুক্তামণি। মুক্তামণির হাতের চামড়া জোড়া লাগছে (স্কিন গ্রাফটিং) সুন্দরভাবে।

Advertisement

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, ভালো আছে মুক্তামণি। মুক্তামণির হাতের চামড়া সুন্দরভাবে জোড়া লাগছে। সার্বক্ষণিক অবজারভেশনে রাখা হয়েছে তাকে।

সূত্র আরও জানায়, কয়েক দফায় মুক্তামণির হাতে অস্ত্রোপচার শেষে গত ১০ অক্টোবর প্রথম শুরু হয় চামড়া লাগানোর প্রক্রিয়া।প্রায় আড়াই ঘণ্টার অপারেশন শেষে ওইদিন মুক্তামণির পা থেকে চামড়া নিয়ে প্রতিস্থাপনের কাজ প্রাথমিকভাবে শেষ হয়। সেসময়  ৫০ শতাংশ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়

ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, ‘এটা তার ভালো হওয়ার একটি লক্ষণ। দুই সপ্তাহ পর বাকি ৫০ শতাংশ চামড়া প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশন করা হবে।’

Advertisement

এরপর গত ৬ নভেম্বর সকালে মুক্তামণির পুরো হাতে চামড়া লাগানো সম্পন্ন হয়। সকাল ৯টার দিকে মুক্তামণিকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। দেড় ঘণ্টার অপারেশনে পুরো হাতে চামড়া লাগানোর কাজ শেষ করেন চিকিৎসকরা।

এ ব্যাপারে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জাগো নিউজকে বলেন, মুক্তামণি ভালো আছে। সার্বক্ষনিক অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক থাকায় মুক্তামণিকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রথমে ৫০ শতাংশ এরপর হাতের বাকি অংশে চামড়া লাগানোর কাজ শেষ হয়। সুন্দরভাবে চামড়া জোড়া লাগছে। কোনো সমস্যা আপাতত দেখছি না। এখনও ড্রেসিং করা হচ্ছে। প্রতিস্থাপিত চামড়া জোড়া লাগা শেষ হলে ড্রেসিং খুলে ফেলা হবে।’

মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম জাগো নিউজকে বলেন, আশায় আছি। সে তার হাতটি নাড়বে। ও সুস্থ হয়ে গেলে অপ্রাপ্তি বলে জীবনে কিছু থাকবে না। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই সে যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মুক্তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সাতক্ষীরার শিশু মুক্তাকে নিয়ে গত ৯ জুলাই জাগো নিউজে লুকিয়ে রাখতে হয় মুক্তাকে শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সরকারিভাবে বিনামূল্যে মুক্তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। এরপর বিষয়টি জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন।

পরে ঢামেকে ভর্তি করা হয় মুক্তাকে। মুক্তার চিকিৎসার জন্য একটি বোর্ড গঠনসহ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢামেক কর্তৃপক্ষ।

গত ৫ আগস্ট মুক্তার ডান হাতের বায়োপসি সম্পন্ন হয়। ৮ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা জানান, মুক্তার হাতের একাধিক অপারেশনের প্রয়োজন রয়েছে। এরপর ১২ আগস্ট প্রথম অপারেশন সম্পন্ন হয় মুক্তার। চিকিৎসকরা ওই অপারেশনকে ‘সফল’ বলে দাবি করেন। ৮ অক্টোবর ৪র্থ দফায় তার হাতে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর চামড়া লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় ১০ অক্টোবর, যা ৬ নভেম্বর শেষ হয়।

জেইউ/জেডএ/বিএ