খেলাধুলা

এশিয়ান তীরন্দাজদের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

দেশে আরচারির চর্চা বেশি দিনের না হলেও তীর-ধনুকের এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পদচারণা শুরু হয়েছে বিশ্ব পর্যায়ে। অলিম্পিকেও এখন উপস্থিতি থাকে লাল-সবুজের দেশের আরচারদের। দক্ষিণ এশিয়ান, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও থাকছে ধারাবাহিক উপস্থিতি।

Advertisement

দেশের সম্ভাবনাময় এ খেলাটির এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে নতুন করে নিজেদের নাম লেখাবে বাংলাদেশ। মাঝে মাত্র একটি দিন। আগামীকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে এশিয়ার আচরারদের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। প্রতিযোগিতার ২০ তম আসরের স্বাক্ষী হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম।

টুর্নামেন্টের গায়ে এশিয়া কাপের লেবাস থাকলেও এ প্রতিযোগিতা অনেক উঁচু মানের। আরচারিতে যে দেশগুলো বিশ্ব শাসন করে তাদের বেশিরভাগই এশিয়ার। অলিম্পিকে পদকজয়ী কয়েকজন আচরাও খেলবে এ চ্যাম্পিয়নশিপে। তাইতো ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এ প্রতিযোগতায় লড়াই হবে অনেক বিশ্বসেরাদের মধ্যেও।

আরচারদের এ মিলনমেলায় অংশ নিতে এন্ট্রি করেছিল ৩৫ দেশ। তবে উজবেকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত টুর্নামেন্টে অংশ নিতে নাম নিবন্ধন করলেও এখনো ফ্লাইট সূচি জানায়নি।

Advertisement

যে কারণে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল আভাস দিলেন টুর্নামেন্ট হতে পারে ৩৩ দেশেরও।

মঙ্গোলিয়া, কুয়েত ইতিমধ্যে ঢাকায় পা রেখে অনুশীলনও করেছে। আজকের মধ্যে এসে পড়বে বাকি দলগুলো। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে হবে দলগুলোর অফিসিয়াল অনুশীলন।

টুর্নামেন্ট সামনে রেখে কাল ১৮ সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করা হয়েছে। রিকার্ভ একক ও দ্বৈত, কম্পাউন্ড একক, দ্বৈত ছাড়াও রিকার্ভ এবং কম্পাউন্ডের মিশ্র দ্বৈতে বাংলাদেশের পুরুষ ও মহিলা আরচাররা অংশ নেবেন।

টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের লক্ষ্য সেরা ১০ থাকার লক্ষ্যের কথাই সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল। আর রিকার্ভ ইভেন্টে আগের সেরা সাফল্য কোয়ার্টার ফাইনালকে ছাড়িয়ে সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে লাল-সবুজের দেশ।

Advertisement

আরচারিতে এশিয়ার সেরা দলের তালিকা করলে আগে আসবে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত, চাইনিজ তাইপে, ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার নাম। এ দেশগুলোর আরচারদের লড়াইটা বেশ জমবে বলেই মনে করছেন সবাই। বাংলাদেশের জন্য এত বড় টুর্নামেন্ট থেকে পদক পাওয়া কঠিন।

তবে বর্তমানের সেরা পারফরমারদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে জাতীয় দল। এখানে কোনো আরচারের অতীত অর্জনকে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। যে কারণে গত রিও অলিম্পিকে অংশ নেয়া শ্যামলী রায়কেও ছেটে ফেলা হয়েছে তালিকা থেকে।

টুর্নামেন্ট সামনে রেখে ভারতীয় কোচ নিশীথ দাসের অধীনে টঙ্গীতে ৮ মাসের মতো অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। অনুশীলনে সন্তুষ্ট বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘সেমিফাইনালে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য। রোমান সানার ওপর আমার দৃঢ় বিশ্বাস সে ভালো করবে। তাছাড়া মেয়ে আরচাররাও টুর্নামেন্টে ভালো করবে।’

কোচের সুরে সুর মেলান রোমানও, ‘এবারের মতো অনুশীলন কোনো টুর্নামেন্টের আগেই হয়নি। আমরা নিজস্ব মাঠে দীর্ঘদিন অনুশীলন করেছি। সেখানে থাকা-খাওয়ার পরিবেশ যথেষ্ট ভালো। আশাকরি টুর্নামেন্টে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।’

বাংলাদেশ দল

রিকার্ভ ইভেন্ট পুরুষ দল-মো. রোমান সানা, ইব্রাহিম শেখ রেজওয়ান, তামিমুল ইসলাম এবং হাকিম আহমেদ রুবেল, রিকার্ভ ইভেন্ট নারী- বিউটি রায়, রাদিকা আক্তার শাপলা, নাসরিন আক্তার, নাসরিন আক্তার এবং রাবেয়া খাতুন, কম্পাউন্ড পুরুষ- আবুল কাশেম মামুন, নাজমুল হুদা, মিলন মোল্লা, এহসান আহমেদ, কম্পাউন্ড দল নারী-সুস্মিতা বণিক, রোকসানা আক্তার, বন্যা আক্তার, বিপাশা আক্তার।

এ ছাড়া যুব অলিম্পিক দলও আছে। তারা হলেন-সাকিব মোল্লা এবং ইতি খাতুন।

এমএমআর/আইআই