‘লা তা’খুজুহু সিনাতু ওয়া লা নাওম’-এ আয়াতাংশটি আল্লাহর একটি মহা গুণের বর্ণনা। যা আয়াতুল কুরসিতে আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা তন্দ্রা ও নিদ্রা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আয়াতের আগের অংশে বলা হয়েছে। তিনি ‘ক্বাইয়্যুম’; জগতের সবকিছুর নিয়ন্ত্রণকারী। সমগ্র সৃষ্টি তাঁর আশ্রয়ে পরিচালিত।
Advertisement
তাইতো আল্লাহ তাআলা বলেন, তাকে (আল্লাহ) তন্দ্রা এবং নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না। জগতের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনায় তাকে ক্লান্ত করে না। এ সব নিয়ন্ত্রণে তাকে বিশ্রাম নেয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। তিনি সব ধরনের দুর্বলতার উর্ধ্বে।
তন্দ্রা ও নিদ্রার মতো দুর্বলতা যে আল্লাহ তাআলাকে স্পর্শ করতে পারে না- এটি মহান প্রতিপালকের কুদরত এবং হেকমতেরই একটি উজ্জ্বল প্রমাণ।
মনে রাখতে হবে- তন্দ্রার সম্পর্ক হলো চোখের সঙ্গে এটি নবি-রাসুলদের ঘুম। আর নিদ্রার সম্পর্ক হলো কলবের সঙ্গে। যা প্রতিটির প্রাণীর ওপর অপরিহার্য হিসেবে চেপে বসে।
Advertisement
হজরত আবু মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের এক মজলিসে দণ্ডায়মান অবস্থায় পাঁচটি কথা বলেছেন->> এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আল্লাহ তাআলার নিদ্রা নেই আর নিদ্রা তাঁর পবিত্র সত্তার যোগ্যও নয়।>> তিনি আমল পরিমাপের পাল্লার রক্ষক। যার জন্যে ইচ্ছা তিনি তা নীচু করেন আর যার জন্য ইচ্ছা তাকে উপরে স্থাপন করেন।>> তাঁর দরবারে (মানুষের) দিনের কার্য বিবরণী রাত আসার আগেই পেশ করা হয়।>> আবার রাতের কার্য বিবরণী দিন আসার আগেই পেশ করা হয়।>> তাঁর আবরণ হলো নূর। যদি এ নূরের আবরণ সরিয়ে দেয়া হয়; তবে তাঁর জামালের নূর সেই সব সৃষ্টিকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাঁই করে দিবে; যার প্রতি তাঁর দৃষ্টিপাত হবে। (মুসলিম, তাফসিরে মাজহারি)
পৃথিবীতে যত ধর্মীয় মতবাদ রয়েছে; সব মতবাদের প্রবক্তারাই তন্দ্রা এবং নিদ্রার সঙ্গে জড়িত। শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলাই এ থেকে ব্যতিক্রম।
এমনকি ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানরাও তাদের প্রতিপালকের ব্যাপারে এ আকিদা পোষণ করেন যে, ‘আল্লাহ তাআলা ছয় দিনে আসমান এবং জমিন সৃষ্টি করেছেন। সপ্তম দিনে তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
কিন্তু ইসলাম এবং মুসলমানদের আকিদা সুস্পষ্ট যে, আল্লাহ তাআলা নিজেই ঘোষণা করেন, ‘তিনি তন্দ্রা এবং নিদ্রা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর এ গুণের ওপর পরিপূর্ণ আকিদা ও বিশ্বাস স্থাপন করে শিরকমুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসে বর্ণিত আয়াতুল কুরসির ফজিলত লাভে যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি