আইন-আদালত

ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

গাইবান্ধা-১ আসনের জামায়াতের সাবেক সাংসদ আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগ এনেছেন প্রসিকিউশন।

Advertisement

আসামিদের বিরুদ্ধে তিন অভিযোগপ্রথম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ৯ অক্টোবর সকালে আসামিরা পাকিস্তানের দখলদার সেনাবাহিনীর ২৫-৩০ জনকে সঙ্গে নিয়ে গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন মৌজামালি বাড়ি গ্রামে হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ, নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে আটক, নির্যাতন ও অপহরণ করে। পরে তাদের দাঁড়িয়াপুর ব্রিজে নিয়ে গিয়ে গনেশ চন্দ্র বর্মণকে তার মাথার সঙ্গে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে হত্যা করে এবং বাকিদের ছেড়ে দেয়। আসামিরা আটকদের বাড়ির মালামাল লুণ্ঠন করে।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে আসামিরা সুন্দরগঞ্জ থানার মাঠেরহাট ব্রিজে পাহারারত ছাত্রলীগের নেতা মো. বয়েজ উদ্দিনকে আটক করে মাঠেরহাটের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করতে থাকে। পরদিন সকালে আসামিরা বয়েজকে থানা সদরের স্থাপিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তিনদিন আটক রেখে নির্যাতনের পর ১৩ অক্টোবর বিকেলে তাকে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ মাটির নিচে চাপা দেয়।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ১০ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত আসামিরা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সুন্দরগঞ্জ থানার পাঁচটি ইউনিয়নের নিরীহ-নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের ১৩ জন চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অবৈধভাবে আটক করে। তাদের তিনদিন ধরে নির্যাতন করার পর পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পের কাছে নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে এবং তাদের মরদেহ মাটিচাপা দেয়। সেখানে ওই শহীদদের স্মৃরণে একটি বধ্যভূমি নির্মিত হয়েছে।

Advertisement

আব্দুল আজিজ ছাড়া মামলায় অন্যান্য আসামি হলেন- মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), মো. আব্দুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), মো. নাজমুল হুদা (৬০) ও মো. আব্দুর রহিম মিঞা (৬২)। মামলায় ছয় আসামির মধ্যে মো. আব্দুল লতিফ কারাগারে আছেন। ঘোড়ামারা আজিজসহ বাকি পাঁচ আসামিরা পালাতক রয়েছেন।

ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সুন্দরগঞ্জের পাঁচগাছী শান্তিরাম গ্রামের মৃত আলম উদ্দিনের ছেলে আজিজার রহমান সরকার বাদী হয়ে জামায়াত নেতা আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালে আজিজার রহমানের বড় ভাই ফয়েজ উদ্দিনকে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগে ওই মামলাটি করা হয়।

অপরদিকে ধর্মপুর গ্রামের আকবর আলীকে হত্যার অভিযোগে জামায়াত নেতা আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন আনিছুর রহমান। গত বছরের ২০ নভেম্বর আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

এফএইচ/জেডএ/বিএ

Advertisement