আন্তর্জাতিক

ভারতের রাস্তায় ভিক্ষা করছেন মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী

ভারতের রাস্তায় ভিক্ষা করেন এমবিএ ডিগ্রিধারী থেকে শুরু করে শিক্ষক এবং মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী ব্যক্তিরাও। ২০১৭ সালের বিশ্ব উদ্যোক্তা সম্মেলনকে সামনে রেখে হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনার জোরপূর্বকভাবে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ ঘোষণার পর নাগরিক জীবনের এ ধরনের কঠিন বাস্তবতা উঠে এসেছে।

Advertisement

হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনারকে উদ্ধৃত করে প্রকাশিত সংবাদে বলা হচ্ছে, দুই মাসব্যাপী ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধের ঘোষণার পর থেকে অনেক ভিক্ষুকের সঙ্গে ৫০ বছর বয়সী ফারজনা নামে এক নারীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি এমবিত্র ডিগ্রিধারী এবং এর আগে লন্ডনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন।

হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্শ্ববর্তী একটি আশ্রয়কেন্দ্রে তাকে রাখা হয়েছে। সেই আশ্রয়কেন্দ্রের নাম দেয়া হয়েছে আনন্দ আশ্রম। ধরে নিয়ে আসা অন্য ভিক্ষুকদেরও সেখানে রাখা হয়েছে।

আশ্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কে. অর্জুন রাও জানান, দু’বছর আগে আকস্মিকভাবে স্বামীর মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন তিনি। কর্মস্থলে ফিরে না গিয়ে ছেলের সঙ্গে হায়দরাবাদেই থেকে যান। পরে অসুস্থতার কারণে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন।

Advertisement

ওই নারীর ছেলে এসে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আশ্রমের একজন কর্মচারী জানান, ওই নারীকে আশ্রমে থাকা অন্য ভিক্ষুকরা ম্যাডাম বলে সম্বোধন করতো। এমনকি আশ্রমে তুলে নিয়ে আসার জন্য ওই নারীর সঙ্গে প্রথম কথোপকথনেই তিনি ঝরঝরেভাবে ইংরেজিতে কথা বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রীন কার্ডধারী ৪৪ বছর বয়সী রাবেয়া বসরী নামে এক নারীকে আশ্রমে তুলে নিয়ে আসা হয়। এই নারীও কয়েক বছর যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করেছেন। রাবেয়ার ব্যাপারে অর্জুন রাও জানান, এই নারীর এক স্বজন তাকে ঠকিয়ে ভিক্ষুক হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, রাবেয়া স্বতস্ফূর্তভাবে ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। তার গল্প শুনে আমাদের চোখে জল এসে গেছে। একসময় তার অঢেল সম্পদ ছিল। কিন্তু সেগুলোও তার স্বজনরা নিয়ে নিয়েছে।

Advertisement

রাবেয়ার কোনো এক স্বজন এসে তাকে নিয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

কয়েকদিন আগে ভিক্ষুকদের চিহ্নিত করে দেয়ার বিনিময়ে পাঁচশ রুপি করে পুরস্কার ঘোষণার পরিকল্পনা করছিলেন হায়দরাবাদ পুলিশ কমিশনার। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ভিক্ষুকমুক্ত শহর গড়ার লক্ষ্যে এ ধরনের পরিকল্পনা করেন তিনি।

ইতোমধ্যেই হায়দরাবাদ পুলিশ কমিশনার সেখানে দুই মাসব্যাপী ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

সূত্র : দ্য হিন্দু

কেএ/আইআই