মঙ্গলবারের বিকেলেটাকে কোনোভাবেই আলাদা করা গেলো না অন্য দিনগুলো থেকে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম চত্বরে হাজারো মানুষের আনাগোনা। যে যার কাজে ব্যস্ত। কয়েকটি ক্রীড়া স্থাপনাই কেবল স্বাক্ষী দিচ্ছে-এখানে খেলাধূলা হয়।
Advertisement
কিন্তু মানুষের মুখে খেলা নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। দেশের খেলাধূলার প্রাণকেন্দ্রে মানুষের আগমন অন্য সব কাজে। কেনা-কাটার জন্যই এখন অনেকের আদর্শ জায়গা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম চত্বর।
অথচ আশির দশক হলে মঙ্গলবারের বিকেলটি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মুখরিত হয়ে থাকতো মোহামেডান আর আবাহনীর ম্যাচ নিয়ে আলোচনায়। ২৪ ঘন্টা পর যে এ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে মুখোমুখি হচ্ছে দেশের জনপ্রিয় দুই ক্লাব।
ফুটবলই এখন মানুষকে আগের মতো মাঠে টানতে পারেনা। মোহামেডান-আবাহনী লড়াইও আর আগুনের ফুলকি ছড়ায় না। অন্য পাঁচ-দশটি ম্যাচের মতোই কেটে যায় দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের খেলা। এ দুই দলের ম্যাচ নিয়ে দর্শকেরও থাকে না বাড়তি কোনো আয়োজন।
Advertisement
শূণ্য গ্যালারির সামনেই এখন মাঠে খেলে সাদা-কালো আর আকাশি-হলুদ জার্সিধারীরা। তারপর আবার যদি দুই দল সমানভাবে লড়াইয়ে না থাকে, তাহলে তো আরো পানসে হয় মতিঝিল আর ধানমন্ডির ক্লাব দুটির লড়াই।
দর্শক মাঠে আসুক কিংবা না আসুক-দেশের দুই সমর্থকপুষ্ট দলের আরেকটি ফুটবল লড়াই কাল (বুধবার)। সন্ধ্যা পৌনে ৭ টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ২১ তম লিগ লড়াইয়ে নামছে মোহামেডান ও আবাহনী। বিকেলে দিনের অন্য ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী খেলবে বিজেএমসির সঙ্গে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে দেশের দুই জনপ্রিয় ক্লাব মোহামেডান ও আবাহনী। আগের ৯ আসরে ৫ বার শিরোপা জিতেছে আবাহনী। মোহামেডানের সাফল্য প্রথম তিন আসরের রানার্সআপ হওয়া।
সাদা-কালো শিবিরে প্রিমিয়ার লিগের ট্রফির জন্য হাহাকার। ক্লাবের শো কেসে অনেক ট্রফি থাকার পরও রয়ে গেছে বিশাল এক শূন্যতা। প্রিমিয়ার লিগের ট্রফি যে ঘরে নেয়া হয়নি দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির।
Advertisement
এ পর্যন্ত হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৯ শিরোপা ভাগাভাগি করে নিয়েছে আবাহনী, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল। হ্যাটট্রিকসহ আবাহনী শিরোপা জিতেছে ৫ বার, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৩ বার এবং শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ১ বার। দশম আসরের শিরোপা দৌঁড়েও টিকে আছে এ তিন ক্লাব।
প্রিমিয়ার লিগের আগের ২০ বারের মুখোমুখিতে জয়ের পাল্লা ভারি আবাহনীরই। তারা জিতেছে ৮ ম্যাচ। মোহামেডানের জয় ৪টি। ড্র হয়েছে বাকি ৮ ম্যাচ। গত আসরের দু’বারের সাক্ষাতেই মোহামেডানকে হারিয়েছে আবাহনী। জয়ের ব্যবধান প্রথম লেগে ৩-০ ও দ্বিতীয় লেগ ২-১।
চলমান লিগের প্রথম পর্বের লড়াইয়ে আবাহনী জিতেছে ১-০ গোলে। ২০ ম্যাচে মোহামেডানেকে ১৯ গোল দিয়েছে আবাহনী, হজম করেছে ১৩টি।
পয়েন্ট টেবিলে আবাহনীর অবস্থান দিনে। মোহামেডান আছে ছয়ে। দুই দলের পয়েন্টের পার্থক্য ১০। ১৩ রাউন্ড পর আবাহনী (২৭ পয়েন্ট) বেশ ভালো ভাবেই টিকে আছে শিরোপার দৌঁড়ে। ১৭ পয়েন্ট পাওয়া মোহামেডান সম্ভাবনায় নেই।
তাই তো এ ম্যাচের আগে দুই রকম সমীকরণ দুই দলের সামনে। আবাহনী জিতলে তাদের দূরত্ব কমবে সামনে থাকা শেখ জামাল ও চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে। মোহামেডান জিতলে নেয়া হবে প্রথম পর্বে হারের প্রতিশোধ। সেই সঙ্গে পয়েন্ট টেবিলে একধাপ উপরে উঠতে পারবে তারা।
আরআই/এমএমআর/আইআই