বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্বজন ও চিকিৎসকদের মধ্যে মারামারিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমেনা বেগম নামে (২২) এক প্রসূতি নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
Advertisement
রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিভাগে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর অসুস্থ আমেনা বেগমকে জরুরিভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা।
আমেনা বেগম নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা আমতলা এলাকার বাসিন্দা শাহিন ঢালীর স্ত্রী।
প্রসূতি বিভাগে ভর্তি অন্য রোগীরা জানান, আমেনা বেগম (২২) গত ৮ নভেম্বর বান্দ রোডের বেসরকারি সিটি জেনারেল হাসপাতালে বিনাঅপারেশনে এক কন্যা শিশুর জন্ম দেন। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ শুরু হলে স্বজনরা গত ১৭ নভেম্বর আমেনাকে শেরে-ই বাংলা মেডিকেলের স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করেন। গত ২দিনে রোগীর শরীরে ৫ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। রোগীর শরীরে আরও রক্ত দরকার বলে জানায় চিকিৎসকরা। স্বজনরা চিকিৎসকদের রক্ত জোগাড় করতে বলেন।
Advertisement
এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে ওই ওয়ার্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন রোগীর স্বজনরা। এতে প্রসূতি নারী আমেনা বেগমের পেটে আঘাত লাগলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আমেনা বেগমের স্বজনরা জানান, রোগী ভর্তির পর রক্ত সংগ্রহ করতে বলেন চিকিৎসকরা। রক্তের ব্যাগ ম্যানেজের পরও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অবহেলা করতে থাকেন এবং ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখ করেন, রক্ত ম্যানেজ করতে না পারায় রোগীর অবস্থা উন্নতি হচ্ছে না।
চিকিৎসক রোগীর ব্যবস্থাপত্রে এমন কথা উল্লেখ করা বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বামী শাহিন ও ইন্টার্ন চিকিৎসক রাকিবের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর একদল ইন্টার্ন চিকিৎসক এসে রোগীর সামনেই শাহিন ঢালীকে মারধর করে। এসময় রোগীর পেটে লাথি মারেন বলেও দাবি করেন শাহিন ঢালী। ওই লাথির কারণে রক্তক্ষরণ শুরু হয় রোগীর।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. শিখা সাহা জানান, বর্তমানে রোগীর অবস্থা ভালো এবং চিকিৎসায় সে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
Advertisement
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, ঘটনা নিয়ে রোগীর স্বজন এবং চিকিৎসকদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাইফ আমীন/এমএএস/এমএস