সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আপনাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে জনগণের কল্যাণকে প্রাধান্য দিতে হবে। মনে রাখবেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সরকার চলে, আপনাদের সংসার চলে। কর্মক্ষেত্রে যে সার্ভিস দেন তা জনগণের প্রতি আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য, দান বা দয়া নয়।
Advertisement
শনিবার রাতে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনাদেরকে (সরকারি কর্মকর্তারা) নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সব ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে সততা, নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বর্তমান সরকার দেশ ও জনগণের কল্যাণে বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এসব কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আপনারা অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। সরকারের নীতি নির্ধারণী কর্মকাণ্ডেও আপনাদের সহায়ক ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, জনগণের সেবক। তাই সরকারের প্রতিটি কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে এবং এর সুফল জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দিতে আপনাদের নিরন্তন প্রয়াস চালাতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। কোয়েরির পরিবর্তে সলিউশনকে প্রাধান্য দিতে হবে। ইনপুটের পরিবর্তে আউটপুট ও আউটকামের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবে রূপায়িত হবে। রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশের কাতারে স্থান করে নেবে, ইনশাল্লাহ।
Advertisement
ভাষণের শুরুতে রাষ্ট্রপতি পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, তার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি অর্জন করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। একই সঙ্গে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা অকাতরে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন, তাদেরকে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রপতি অফিসার্স ক্লাব ঢাকার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে ক্লাবের প্রয়াত সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি আমরা। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আজ আমরা উন্নয়নের পথে অদম্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারাকে অব্যাহত রখার জন্য সুস্থ মননের মানুষ প্রয়োজন। যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব প্রয়োজন। নিষ্ঠাবান কর্মী প্রয়োজন। আর এই মননশীল, নিষ্ঠাবান ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে অফিসার্স ক্লাব ঢাকা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে বলে আশা করি।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এবং অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচএস/আরএস
Advertisement