লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে (২৩) অপহরণ করে স্বামী সহযোগীদের নিয়ে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় কাঁচি দিয়ে তার মাথার চুল কেটে মারধর করা হয়।
Advertisement
শনিবার বিকেলে ওই নির্যাতিত নারীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কমলনগর উপজেলা তোরাবগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করে রাতভর গণধর্ষণ করা হয়।
নির্যাতিত নারী কমলনগর উপজেলার চরকালকিনী গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে। তার ছয় ও আট বছর বয়সী দুটি ছেলে-মেয়ে রয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী আবু কালাম (৩৫) পার্শ্ববর্তী তোরাবগঞ্জ এলাকার আনোয়ার আলীর ছেলে।
নির্যাতিতার মা বলেন, ১০ বছর আগে আবু কালামের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। এরপর থেকে একাধিকবার নানা অজুহাতে যৌতুক নেয় সে। গত বছর ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। টাকা না দেয়ায় কারণে-অকারণে তাকে মারধর করা হয়।
Advertisement
উপায়ন্তর না পেয়ে আদালতের মাধ্যমে গত পাঁচ মাস আগে স্বামীকে তালাক দেয়। এর জের ধরে ওই স্বামী তার আরও তিন বন্ধুকে নিয়ে মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় কাঁচি দিয়ে মাথার চুল এলোমেলো করে কেটে দেয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করা হয়। এরপর চলে থেমে থেমে নির্যাতন।
নির্যাতিত ওই নারী হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার শাহপুর গ্রামের তার ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। সন্ধ্যায় তোরাবগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে ওঁৎপেতে থাকা তার তালাকপ্রাপ্ত স্বামী তিন বন্ধু মিলে তাকে অপহরণ করে আবু কালামের বাড়ির একটি ঘরে বন্দি করে রাখে।
এ সময় তাকে মারধর ও চুল কেটে নির্যাতন করা হয়। পরে তারা রাতভর পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারাই। ভোরে তারা আমাকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের কাছ থেকে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত স্বামী আবু কালামের মোবাইল ফোনে রাত পৌনে ৮টায় একাধিকবার কল করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
Advertisement
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্যাতিত ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাকে মারধর ও মাথার চুল কেটে দেয়ার আলামত রয়েছে। তবে ধর্ষণের বিষয়টি ডাক্তারি পরীক্ষার পরে নিশ্চিত বলা যাবে।
এ বিষয়ে কমলনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
কাজল কায়েস/এএম/আরআইপি