ব্যাট বলের লড়াই যতটা জমার কথা ততটা জমেনি। টি-টোয়েন্টি ফরমেটে চার ছক্কাই শেষ কথা। ব্যাটসম্যানের ব্যাটে রানের ফলগু ধারা বইবে, হাই স্কোরিং ম্যাচ হবে, গ্যালারিতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়বে- এটাই প্রত্যাশা।
Advertisement
কিন্তু এখন পর্যন্ত এবারের বিপিএলে সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের জ্বলে উঠতে না পারা, টুর্নামেন্টের জৌলুশ বাড়তে দেয়নি তেমন। তবে আশার কথা সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রান খড়া কাটতে শুরু করেছে স্থানীয় ব্যাটসম্যানদের। দর্শকরাও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সত্যিকার আশ্বাদন পেতে শুরু করেছে।
ঠিক এমন অবস্থায় একটা নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটতে যাচ্ছে এবারের বিপিএলে। টি-টোয়েন্টি ফরমেটের দুই সেরা ব্যাটসম্যান গেইল-ম্যাককালাম মাঠে নামতে যাচ্ছেন আজ। শনিবার সন্ধ্যায় শেরেবাংলায় মাশরাফির রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলবেন সংক্ষিপ্ত ফরমেটের ভয়ংকর এই দুই ব্যাটসম্যান। প্রতিপক্ষ তামিমের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
টি-টোয়েন্তি ফরমেটের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান গেইল বিপিএলে নিয়মিত পারফরমার। আগের চার আসরে প্রতিবারই এ ক্যারিবিয়ান ওপেনারের দেখা মিলেছে। তবে সেগুলো ভিন্ন দলের হয়ে। ২০১২ সালে বরিশাল বার্নার্সের হয়ে মাঠ মাতানো গেইল গত বছর খেলে গেছেন চিটাগাং ভাইকিংসের হয়ে। এবার নতুন বছরে দল পালটে যোগ দিয়েছেন রংপুরে।
Advertisement
অন্যদিকে টি-টোয়েন্টি ফরমেটে একমাত্র দুই হাজারের বেশি রান করা কিউই সাবেক অধিনায়ক ও ব্যাটসম্যান ম্যাককালামের এবারই প্রথম বিপিএল খেলতে আসা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে গেইল-ম্যাককালাম যে কত ভয়ংকর ব্যাটসম্যান তা প্রমাণ মিলে দুটি পরিসংখ্যানই। প্রথমটি হল ক্রিকেটের সবচেয়ে এই ছোট পরিসরে চারজন মাত্র ব্যাটসম্যান দুটি করে সেঞ্চুরি করেছেন গেইল-ম্যাককালাক সেই চারজনের দুইজন। দ্বিতীয়ত আন্তর্জাতিক আসরে সর্বাধিক ১০১ টি ছয় হাকানোর রেকর্ড গেইলের। দ্বিতীয় সর্বাধিক ৯৩ ছক্কার মালিক ম্যাককালাম।
চার ছক্কা হাকানোই যাদের জুরি মেলা ভার, উইকেটে গিয়েই যারা প্রতিপক্ষ বোলিংকে তছনছ করে দিতে বিশেষ দক্ষ, সেই গেইল-ম্যাককালামের উপস্থিতি অবশই বিপিলের আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে। রংপুর ভক্তরা তো বটেই, সাধারণ ক্রিকেট অনুরাগীরাও উন্মুখ হয়ে আছেন এই দুইজনের ব্যাটিং তাণ্ডব দেখতে। তারাও মুখিয়ে আছেন মাঠ মাতাতে। দর্শক বিনোদন দিতে। গত দুইদিন মিডিয়ার সঙ্গে আলাপে তেমন আশার বাণীই শুনিয়েছেন গেইল-ম্যাককালাম। আজ কি শেরে বাংলায় গেইল-ম্যাককালামের ছক্কা ফুলঝরি ছুটবে? এমন কৌতূহলী প্রশ্ন সবার।
অন্যদিকে গেইল-ম্যাককালামের ব্যাটিং ঝড় থামাতে আগে ভাগেই সতর্ক কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। গতকাল রাতেই উড়িয়ে এনেছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বোলিং সেনশন পাকিস্তানি তারকা হাসান আলিকে। গতির বুদ্ধিদীপ্ত পরিবর্তন আর সুইং দিয়ে এতোমদ্ধেই নিজের বোলিং সমর্থের প্রমাণ রেখেছেন এই বোলার। বিশ্বের বাঘাবাঘা বোলারকে পেছনে ফেলে গত জুনে ইংল্যান্ডে হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বাধিক উইকেট শিকার করে হাসান আলি জানান দিয়েছেন গতির প্রচণ্ডতায় না হলেও বলের কারুকার্যে অনেক কিছুই পারি। এখন দেখার বিষয় গেইল-ম্যাককালামের ব্যাটিং তাণ্ডব থামাতে পারেন কি না হাসান আলি?
এখন পর্যন্ত কুমিল্লার প্রধান বোলিং অস্র রশিদ খান। কিন্তু বাঁহাতি গেইলের বিপক্ষে লেগি রশিদ খান কতটা সফল হবেন সেটাই দেখার। তবে ব্যাক আপ হিসেবে অভিজ্ঞ শোয়েব মালিকের অপ স্পিন দিয়ে ঠ্যাকা কাজ চালানোর চেষ্টায় কুমিল্লা কোচ সালাউদ্দিন।
Advertisement
পেসার হাসান আলি আর মিডল অর্ডার কাম অপ স্পিনার শোয়েব মালিক আসায় শক্তি বেড়েছে কুমিল্লার। পাশাপাশি মধুর সমসসায় কোচ সালাউদ্দিন। কাকে রেখে কাকে একাদশে রাখবেন। হাসান আলি না ডোয়েন ব্রাভো, মোহাম্মদ নবী না শোয়েব মালিক-এ চিন্তায় মশগুল কুমিল্লা কোচ। তনে শেষ পর্যন্ত আজকের ম্যাচে তার পাঁচ বিদেশি রিক্রুটমেন্ট হতে যাচ্ছেন জস বাটলার, মারলন স্যামুয়েলস, শোয়েব মালিক, রশিদ খান ও হাসান আলি।
টিম কম্বিনেশনের জন্য পাঁচ বিদেশির কোটা থেকে আজকে নাম কাটা যাচ্ছে মোহাম্মদ নবীর। শনিবার রংপুরের বিপক্ষে অধিনায়ঙ্কত্ব করবেন তামিম ইকবাল। একাদশে জায়গা হারিয়ে ড্রেসিং রুমেই বসে থাকতে হবে আফগান নবীকে।
জনপ্রিয়, প্রশংসা ধন্য মাশরাফির গতিশীল নেতৃত্ব আর গেইল-ম্যাককালামের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে তামিম, লিটন, ইমরুল, সাইফুদ্দিন ও পাঁচ বিদেশির কুমিল্লা কতটা কুলিয়ে উঠতে পারে সেটাই দেখার। দেখা যাক শেষ হাসি কে হাসেন, মাশরাফি না তামিম?
এআরবি/এমআর/এমএস