গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে ৬০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ১১ কোটি টাকা বেশী রাজস্ব আদায় হয় বলে জানায় শুল্ক বিভাগ। সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবসায় নানা সমস্যা ও মাদক ইয়াবার বিরুপ প্রভাব সত্বেও পণ্য আমদানি-রফতানি এখনো আশানুরূপ বলে জানায় বন্দর সংশ্লিষ্টরা।টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা জানান, গত ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের (জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত) ২৩২১টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ৬০ কোটি ৩৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৭৫ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। মিয়ানমার থেকে ২৭৯ কোটি ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার পণ্য আমদানি করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক গত অর্থ বছরে ৪৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ কোটি ৫৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বেশী রাজস্ব আদায় হয়েছে।মিয়ানমার থেকে হিমায়িত মাছ, শুটকি, সুপারি, কাঠ, আচার, ক্যালসিয়াম, তেতুঁল, বড়ই, হলুদ, তৈরি পোশাক, মুলি বাঁশ, গোলপাতা, বেঁত, আদা, সেন্ডেল, ছাতা, তুলা, গরু-ছাগলের চামড়া, গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি আমদানি করা হয়।অপরদিকে ৭২৪টি বিল অব এক্সর্পোটের মাধ্যমে ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৩১ হাজার টাকার মালামাল মিয়ানমারে রফতানি করা হয়েছে। প্রতিবছর সীমান্ত বাণিজ্যে পণ্য আমদানির তুলনায় রফতানি হয় অনেক কম। যার ফলে আমদানি ও রফতানি পণ্যের বৈষম্য দূরীকরণের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।বাংলাদেশ থেকে সিমেন্ট, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী, গরুর নারি বুড়ি, অক্স পেনিস, অ্যালুমুনিয়াম সামগ্রী, ওষুধ, চুল, গার্মেন্টস কাপড় ও গেঞ্জি, ছাতা, প্লাস্টিক পণ্য, টিউব ওয়েল, গাজী ট্যাংক, বিস্কিট, সেভেন আপ ইত্যাদি মালামাল রফতানি করা হয়।শুল্ক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির আরো জানান, গত অর্থ বছরে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও আমদানি আশানুরূপ হওয়ায় বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়েছে। গত বছরের চেয়ে মিয়ানমারে দেশীয় পণ্য রফাতানিও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।বন্দরের ব্যবসায়ী মীর কামরুজ্জামান ও মো. আরিফ জানান, সীমান্ত বাণিজ্যের আমদামি-রফতানির ক্ষেত্রে দু’দেশে নানা সমস্যা লেগে আছে। বাণিজ্যের আওতায় মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানিতে যেমন সমস্যা পোহাতে হয়, তেমনি দেশীয় পন্য রফতানি করতে পথে পথে হয়রানির শিকার হতে হয়। পণ্য রফতানিতে সরকারি রাজস্ব না থাকলেও বিদেশ থেকে ডলার এনে দেশীয় পণ্য রফতানি করা হয়। এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে ব্যাবসায়ীরা।তারা আরো বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেক ব্যবসায়ী এ বন্দর থেকে সটকে পড়েছেন। সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবসার সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধান করা না হলে আগামীতে আরো বেশি আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন।এমএএস/আরআই
Advertisement