জারি-সারি, বাউল ও ভাওয়াইয়া গানসহ নানান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে চলছে ‘প্রাণ চিনিগুড়া চাল নবান্ন উৎসব’। মঞ্চে গান আর মঞ্চের বাইরে পিঠা উৎসব এমন উন্মুক্ত আয়োজনে নবান্নের আনন্দে মেতেছে রবীন্দ্র সরোবর।
Advertisement
মেলা উপলক্ষে রবীন্দ্র সরোবরে চলছে ভাওয়াইয়া, একক সংগীত, কবিতা আবৃত্তি ও পথনাটকসহ বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাঙালির ঐতিহ্যকে ধারণ করে মেলা প্রাঙ্গণে ছন আর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৩২টি স্টল। বাংলার নবান্নের ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুুলি, পায়েসসহ নানা ধরনের খাবার পাওয়া যাচ্ছে সেখানে। শুধু তাই নয় নাগরদোলা, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, বানর নাচ, সাপ খেলা ও ঢেঁকিসহ গ্রামবাংলার নানান ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সুযোগ থাকছে সেখানে।
শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সন্তান, পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি উৎসবকে করেছে মুখরিত।
ধানমন্ডির বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম। সরকারি চাকরি শেষে বর্তমানে অবসরে। প্রাণের এই নবান্ন উৎসবে নাতি-নাতনিকে নিয়ে ঘুরে দেখাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী উৎসব নবান্ন উৎসব। এটি শহরের অনেক মানুষের কাছে অপরিচিত। তাই আমার নাতি-নাতনিকে এই উৎসবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এখানে এসেছি। নাগরদোলা, সাপ-বানরের খেলা, বায়োস্কোপ দেখে তারা সত্যই অভিভূত। এমন আনান্দ তারা এর আগে পায়নি। রাজধানীর মানুষের জন্য এমন উৎসবের আয়োজন করায় প্রাণ কোম্পানিকে ধন্যবাদ জানাই।
Advertisement
রবীন্দ্র সরোবরে নবান্ন উৎসব চলছে জেনে স্বামী ও স্কুল পড়ুয়া সন্তানকে নিয়ে এসেছেন শায়লা হক। কিনেছেন নানা ধরনের পিঠা। তিনি বলেন, ছোটবেলায় বাবা-মা, মুরব্বিদের কাছে শুনেছি-ধান দিয়ে আসে নবান্ন। ধান আসবে, কৃষাণী হাসবে, ছেলে-মেয়ে খেলবে এটাই বাংলার চিরাচরিত অধ্যায়। আর এটাকে ঘিরেই নবান্ন উৎসব। তবে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই উৎসব। রাজধানীর অনেকেই এই উৎসব সম্পর্কে জানে না। তাই আমার সন্তানকে এই উৎসবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এসেছি। নিজেরা ঘুরে ঘুরে নানা পিঠা-পুলি কিনেছি। বাচ্চাকে নাগরদোলায় চড়িয়েছি, সাপ খেলা, বানার খেলা দেখালাম।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসবের সঙ্গে শহরবাসীকে পরিচয় করিয়ে দিতেই এই আযোজন। এ আয়োজনে শহুরে মানুষেরা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের স্বাদ পাচ্ছেন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই নবান্ন উৎসব শেষ হবে শনিবার। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলা এই মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রাণ চিনিগুড়া সুগন্ধি চাল আয়োজিত এই নবান্ন উৎসবের মিডিয়া পার্টনার জাগোনিউজ২৪.কম এবং জাগো এফএম। এছাড়া সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে প্রাণ প্রিমিয়াম ঘি ও খানদানি চেয়ার।
এএস/এআরএস/পিআর
Advertisement