২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বাজেট বাস্তবায়নে বেসরকারি খাত সরকারকে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। একই সঙ্গে বাজেট পাস হওয়ায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি একথা জানিয়েছে। এতে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক খাতসহ সকল ধরণের রফতানিতে উৎসে কর ১ শতাংশ করা হলেও তা সংশোধন করে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ হয়েছে। এতে তৈরি পোশাকসহ সকল রফতানিখাত উৎসাহিত হবে। সংশোধিত অর্থ বিলে ন্যূনতম কর হার এলাকাভেদে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা করা হয়েছে। এর আগে বাজেট প্রস্তাবনায় এই হার সবার জন্যই চার হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রস্তাবটি সংশোধন করে এলাকাভিত্তিক ন্যূনতম কর হার নির্ধারণ করায় আয়কর খাতে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। এফবিসিসিআই বলছে, অনলাইনে পণ্য বিক্রির উপর ৪ শতাংশ হারে মূসক আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহার করার পাশাপাশি কমানো হয়েছে মোবাইল সিম ব্যবহারের উপর প্রস্তাবিত সম্পূরক শুল্ক। এতে আইটি খাত উৎসাহিত হবে এবং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। সংগঠনটি আরো বলছে, ইউনানি, আয়ুর্বেদ ও ভেষজ ওষুধের উৎপাদন পর্যায়ে উৎপাদন পর্যায়ে প্রস্তাবিত মূসক প্রত্যাহার করায় স্থানীয় ইউনানি, আয়ুর্বেদ ও ভেষজ খাত উপকৃত হবে যা স্বাস্থ্য সেবায় ভূমিকা রাখবে। শুকনা মরিচ, তেলবীজ পরিশোধিত ও অপরিশোধিত ভোজ্যতেল, চাল, চালের খুদ, গম, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানি পর্যায়ে প্রস্তাবিত ২ শতাংশ কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে। পরিপূর্ণ মোটরসাইকেল আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৪৫ থেকে ৬০ শতাংশ করা হয়েছে যা, স্থানীয় সিকেডি মোটরসাইকেল শিল্পের প্রসারকে ত্বরান্বিত করবে। পোলট্রি ও মাছের চাষ থেকে করমুক্ত আয়ের সীমা ১০ লাখ টাকা থেকে সংশোধন করে ১৯ লাখ টাকা করা হয়েছে এতে পোল্ট্রি ও ফিশারিজ খাত উৎসাহিত হবে আমরা মনে করি। এছাড়াও নতুন ব্যাংক যেগুলো এখনো শেয়ারবাজার তালিকাভুক্ত হয়নি, সেসব ব্যাংকের প্রতিষ্ঠানিক বা করপোরেট করের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ শতাংশ । যদিও বাজেট প্রস্তাবে যেসব ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত নয় তাদের প্রাতিষ্ঠানিক করের হার সাড়ে ৪২ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছিল।এছাড়াও মূসক আইন-২০১২ যা ২০১৬ সালে কার্যকর করা হবে তা সংশোধন করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং এফবিসিসিআই যৌথ কমিটির সুপারিশ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। বাজেট পরবর্তী আরও কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ এফবিসিসিআই-এর প্রস্তাব যথাযথভাবে প্রতিপালিত হয়নি যা পরবর্তীতে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে বলে এফবিসিসিআই আশা করে। এর মধ্যে দেশীয় বিস্কুট শিল্পের ট্যারিফ ভ্যালু পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, শিল্পের কাঁচামালের শুল্ক হ্রাস করা, প্লাস্টিক, পেইন্টসহ অন্যান্য বিভিন্ন খাতের মূসক, আয়কর ও শুল্ক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাস্টমস-বিজনেস পার্টনারশিপ-এর আওতায় কাজ করার জন্য পুনরায় অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। সর্বোপরি, এফবিসিসিআই-এর প্রস্তাব অনুযায়ী বিনিয়োগ ও শিল্পায়নকে উৎসাহিত করতে বিদ্যমান শুল্কহার অব্যাহত রাখাসহ সব ধরনের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ মাধ্যমে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য একটি শিল্প ও ব্যবসা বান্ধব জাতীয় বাজেট অনুমোদন করায় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।আমরা আশাকরি সরকার বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবেন। বাজেট বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে পূর্বের ন্যায় এফবিসিসিআই সরকারকে সকল ধরণের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বস দিচ্ছে।এসএ/এসএইচএস/আরআইপি
Advertisement