এক যুগ পর এমবিবিএস কোর্সে নতুন কারিকুলামে অনুষ্ঠিত প্রথম পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল ঈদের পর প্রকাশিত হবে। পরীক্ষার খাতা দেখার কাজ শুরু হয়েছে। ঈদের পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হতে পারে বলে জানা গেছে।এবারই শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামে প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। সরকারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা এতদিন পুরনো কারিকুলামে পড়াশুনা করলেও ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামে পড়াশুনা শুরু করেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডীন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ইসমাইল খান বুধবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, নতুন কারিকুলামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ১৩টি সরকারি ও ৪০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রথম পেশাগত পরীক্ষা গত ২৫ জুন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।মোট কত সংখ্যক শিক্ষার্থী প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন তা জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে তা জানাতে পারেননি।২০০২ সালে সর্বশেষ ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) কোর্স কারিকুলাম প্রণীত হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো এমবিবিএস কোর্স কারিকুলাম প্রণীত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনাইটেড নেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) কারিকুলাম প্রণয়নে সহযোগিতা করে।বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) রেজিষ্ট্রার ডা. জাহেদুল হক বসুনিয়ার কাছে নতুন কারিকুলাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশে নতুন কারিকুলামে পরীক্ষার্থীদের ওপর পড়াশুনার চাপ কমাতে টেক্সট বইয়ের আকার ছোট করা হয়েছে। এছাড়া ব্যবহারিক শিক্ষার ওপর বেশী গুরত্ব দেয়া হয়েছে। আগের তুলনায় সিলেবাস শতকরা ২০ ভাগ কমেছে বলে তিনি জানান। জানা গেছে, পুরনো কারিকুলামে তিনটি পেশাগত পরীক্ষা নেয়া হলেও বর্তমান কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা চারটি পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকদের কাজের মূল্যায়ন করার সুযোগ পাচ্ছেন। সর্বশেষ প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ বুলেটিন-২০১৪ তথ্যানুসারে দেশে বর্তমানে ৯৯ টি সরকারি বেসরকারি মেডিকেলে আসন সংখ্যা ৮ হাজার ৬৫৬। তবে বর্তমানে এসংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।জানা গেছে, পাঁচ বছর মেয়াদি এমবিবিএস কোর্সে পুরোনো কারিকুলামে (২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষ) প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় এনাটমি, ফিজিওলজি ও বায়োকেমিষ্ট্রি, দ্বিতীয় পেশাগত পরীক্ষায় প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি, ফরেনসিক মেডিসিন ও কমিউনিটি মেডিসিন এবং চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় সার্জারি, মেডিসিন ও গাইনী বিষয়ে পরীক্ষা দিতেন। চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা জানান, বিশাল আকারের সিলেবাস শেষ করতে শিক্ষার্থীরা হিমসিম খেতেন। নতুন কারিকুলামে বিভিন্ন বিষয়কে চারটি পেশাগত পরীক্ষায় ভাগ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার চাপ কমানো হয়েছে। দ্বিতীয় পেশাগত পরীক্ষায় পাঁচটি বিষয়ের বদলে শিক্ষার্থীরা দুটি বিষয়ে (ফরেনসিক মেডিসিন ও কমিউনিটি মেডিসিন) পরীক্ষা দিবেন। তৃতীয় পেশাগত পরীক্ষায় প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি ও ফার্মাকোলজি বিষয়ে পরীক্ষা দিবেন। প্রথম ও চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষার নিয়মাবলী আগের মতোই রয়েছে। এমইউ/এআরএস/পিআর
Advertisement