ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী হিসেবে নতুন কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে বিশেষ কোটা প্রাপ্তির সুযোগ আরো এক বছর বাড়িয়ে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হবে। গিগগিরই এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা দেয়া হবে বলে অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের লোকসান সমন্বয়ের কথা চিন্তা করে ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে চালু হওয়া আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটা প্রাপ্তির সুযোগের সময়সীমা দুই দফা বাড়িয়ে ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করে অর্থমন্ত্রণালয়। বিশেষ এ সুযোগের সময় শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। কিন্তু বর্তমান বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী কোটা সুবিধার মেয়াদ আবারো বাড়ানো উচিত বলে মনে করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তাই এর মেয়াদ আরো বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করে বিএসইসি। সেই সুপারিশের প্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের আইপিও কোটার মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে।এ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা বিএসইসির সুপারিশসহ চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রণালয় ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ভাবছে। শিগগিরই এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।সূত্র জানায়, দেশের পুঁজিবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা এখনো তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে স্টক এক্সচেঞ্জ গুলো বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আইপিও কোটার সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করে। আইপিও কোটা এক বছর বাড়ানোর সুপারিশ করে অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রন সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।অর্থমন্ত্রণালয়ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের কোটা ২০ শতাংশ রাখার সুযোগ আরো এক বছর বাড়িয়ে নির্দেশনা জারি করতে ইতিবাচক চিন্তা করেছে। তবে এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো নির্দেশনা জরি করেনি মন্ত্রণালয়। তবে শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটা বরাদ্দের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন। আশাকরি মন্ত্রণালয় বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখবে। তাহলে কোটা প্রাপ্তির সুযোগ ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত বাড়বে। আশা করছি খুব শিগগিরই এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয় সার্কুলার জারি করবে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধসে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীদের আন্দোলনের মুখে পুঁজিবাজারের বড় ধরনের সংস্কার করে সরকার। এর মধ্যে ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। প্রণোদনার অংশ হিসেবে মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদন করার জন্য ১৮ মাস অর্থাৎ ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের লোকসান সমন্বয়ের কথা চিন্তা করে কোটা বরাদ্দের সময়সীমা দুই দফা বাড়িয়ে ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এসআই/এসকেডি/এমএস
Advertisement