প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি দার্জিলিং। মানুষ আর প্রকৃতি মিলেমিশে যেন একাকার। এখানকার পাহাড়ের গায়ে গায়ে গড়ে উঠেছে জনপদ। চারদিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। হিমালয়ের কোলে অসাধারণ সৌন্দর্যের মেঘের দেশ পাহাড়কন্যা দার্জিলিং। দার্জিলিং থেকে ফিরে লিখেছেন রবিউল হাসান-
Advertisement
ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭ হাজার ফুট ওপরে দার্জিলিং শহরটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ, প্রাচুর্যেভরা, পশু-পাখি, অপরূপ পাহাড়ি অঞ্চল, চা বাগান, পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট ঝরনা। পাহাড়ের চারদিকে অসংখ্য ঘরবাড়ি। শহরের রাস্তা কোথাও উঁচু, আবার কোথাও নিচু। মেঘের কণা ভেদ করে আঁকাবাঁকা পথের ধারে পুরো দার্জিলিং শহর।
অপরূপ সৌন্দর্যের একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক লীলাভূমি- সবকিছুতেই মুগ্ধতা, এ যেন পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ। ভারত বর্ষের ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত, পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুর মধ্যে অন্যতম দার্জিলিং। ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশের দার্জিলিং পাহাড়ি চূড়ায় ৬ হাজার ৯৮০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত- হিমালয়ের পাদদেশে মেঘের চাদরে আবৃত স্বপ্নময় এক শহর।
প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক দার্জিলিংয়ে ছুটে আসেন। শহরের আবহাওয়া একটু ব্যতিক্রম। শহরটিতে বেশিরভাগ সময়ই বিরাজ করে কনকনে শীত ও ঠাণ্ডা বাতাস। বছরের ৯ মাসই থাকে ঠাণ্ডা। মনে হবে মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশে নিজহাতে ছোঁয়া যাবে মেঘমালাকে। দার্জিলিং শহরের টাইগার হিল থেকে খুব কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা চোখে পড়ে। কাঞ্চনজঙ্ঘা মন কারে হাজারও পর্যটকের। শহরে চোখে পড়ে নারীদের পসরা সাজিয়ে বসার দৃশ্য। বিক্রি হচ্ছে কাশ্মীরি শাল চাদর। কেনাকাটায় ব্যস্ত পর্যটকরা।
Advertisement
শহরের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম টাইগার হিল, রক গার্ডেন, চিড়িয়াখানা, বাতাসিয়া লুপ, মহাকাল মন্দির, টয় ট্রেন, ঘুম রেল স্টেশন ও নেপালি কবি ভানু ভক্তের মূর্তি। পৃথিবীর অন্যতম উঁচু রেল স্টেশন ঘুম। তার উচ্চতা ৬ হাজার ৯শ’ ফুট। এখান থেকে দেখা যায় পুরো দার্জিলিং শহর। শহরের টয় ট্রেনে চরে দার্জিলিং শহরের আট কিলোমিটার ঘুরতে পারেন পর্যটকরা।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে দার্জিলিংয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা কবিরুল ইসলাম (৪০) বলেন, ‘ঢাকা শহরের শত ব্যস্ততা কাটাতে একা দার্জিলিং শহরে ছুটে এসেছি। শহরের দর্শনীয় স্থান ঘুরে ঘুরে দেখব।’
রংপুর শহরের ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির (৪৫) বলেন, ‘ব্যবসায়িক কাজে কলকাতা এসেছি। কাজ শেষে দার্জিলিং শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য এসেছি।’
দার্জিলিং শহরের স্থানীয় টাটা সেমু ড্রাইভার সুদিব (২৫) বলেন, ‘আগের তুলনায় বর্তমানে পর্যটকের সংখ্যা কম। শীতের পর পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছি। পর্যটকের ওপরে আমাদের নির্ভর করতে হয়।’
Advertisement
লেখক : জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট।
এসইউ/জেআইএম