শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) নবম দিনের মতো চলছে আওয়ামী লীগ পন্থী শিক্ষকদের একাংশের উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা এক দিকে উপাচার্য ভবনের সামনে অন্যদিকে মাত্র কয়েক গজ দূরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে উপাচার্য ভবনের রাস্তার মুখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে শাবি শাখা ছাত্রলীগও এতে যোগ দেয়। উপাচার্যকে অবরোধমুক্ত রাখার দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ১টায় তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলও করে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই উপাচার্য ভবন অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকরী শিক্ষকরা। সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি আবাসিক হল থেকে হলের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ছাত্রলীকর্মীরা মিছিল সহকারে ক্যাম্পাসে এসে জড়ো হয়। পরে সোয়া ১০টায় ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে উপাচার্য ভবনের রাস্তার সামনে আন্দোলনকরী শিক্ষকের মুখোমুখি অবস্থান নেয় তারা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে উপাচার্য কার্যালয় অবরোধ মুক্ত রাখার দাবি জানান। এসময় এদের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।শাবি শাখা ছাত্রলীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সবুজ জানান, শাবি ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ সব সময় ন্যায়ের পক্ষে থাকে। এখানেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে শাবি ছাত্রলীগ সমর্থন করছে।
Advertisement
এসময় তাদের পাশে উপস্থিত ছিলেন নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান, সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, ছাত্র উপদেষ্টা ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার, শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কবির হোসেন এবং হলসমূহের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ। এছাড়া উপাচার্য সমর্থিত শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের পাশে ও গোল চত্বরের পাশে অবস্থান করেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।তবে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মুখপাত্র ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক সৈয়দ সামসুল আলম সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলনরতদের শাবি ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ নয় এমনটা দাবি করে বলেন, এদের অনেককেই আমি চিনি না। এদের অনেকের মুখই অচেনা। তিনি এদের মতিগতি বিশেষ সুবিধার না উল্লেখ করে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এদের মূল উদ্দেশ্য কিসে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নন।শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কবির হোসেন জানান, সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ভাল নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কিছুই ভালভাবে চলছে না। দুশ্চিন্তায় আমি নিজেও ক্লাস নিতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যত শীঘ্রই সম্ভব এ অবস্থার নিরসন করতে হবে। তিনি আরো জানান ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য তার কাছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।পরবর্তীতে বিপুল পরিমাণ পুলিশের উপস্থিতিতে প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরদের হস্তক্ষেপে ১১টার দিকে অবস্থান কর্মসূচি পালনরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়।ছামির মাহমুদ/এসএস/আরআইপি