বিনোদন

ছয় সপ্তাহ পেরিয়েও দেশ-বিদেশ মাতাচ্ছে ঢাকা অ্যাটাক

অনেক সময় পরিকল্পনা করেও হয় না অনেক কিছু। বেদম ঢাক ঢোল পিটিয়েও মানুষের মনযোগ পাওয়া যায় না। আলোচনার পর আলোচনা তৈরি করেও মেলেনা প্রশংসা। মিথ্যে প্রপাগান্ডা ছড়িয়েও উদ্দেশ্য পূরণ হয় না। আবার কেউ কেউ অপরিকল্পিতভাবেই পেয়ে যান রাজ্য জয়ের সাফল্য। হতে পারে এটি ভাগ্য। তবে ভাগ্য কখনো দুর্বলের পক্ষে থাকে না। সে সাহসীকেই বরমাল্য দান করে ভালোবাসায়।

Advertisement

তেমনি ঢাকাই সিনেমার এই ক্রান্তিকালে সাহসী একটি নাম হয়ে উঠেছে ‘ঢাকা অ্যাটাক’। তথাকথিত বিগ বাজেটের ট্যাগ খেয়ে নয়, বেশ ভালো একটি বাজেটেই ছবিটি নির্মাণ করেছিলেন দীপঙ্কর দীপন। যার এই ছবি দিয়েই যাত্রা হলো চলচ্চিত্রে। বলা চলে রাজকীয় যাত্রা। ছবির গল্প, মাহি-শুভ জুটি, অন্যান্য পাত্র-পাত্রী, প্রথমবারের মতো পুলিশের অর্থায়নে পুলিশের অংশগ্রহণের সিনেমা, নির্মাতার মুন্সিয়ানার সম্পর্কে অনুমান থেকে একটা প্রত্যাশা ছিলো ছবিটি ভালো করবে। কিন্তু সেটি যে এমন রুপকথার মতো টানা ছয় সপ্তাহ ধরে দেশ-বিদেশ জয় করে চলবে সেই ভাবনা হয়তো কেউই ভাবেননি।

নির্মাতা দীপনের ভাষায়, ‘চেষ্টা করেছিলাম মানুষকে বিনোদিত করবে, হলে টানবে এমন একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে। সবাই মিলে একটা আদর্শ টিম হয়ে ‘ঢাকা অ্যাটাক’র জন্য পরিশ্রম করেছি। একটা ভালো ফল আশা করছিলাম। কিন্তু সেটা এতো অভাবনীয় হবে ভাবতেই পারিনি। দেশের দর্শকরাই এই সাফল্যের মূল কৃতিত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, দুবাই, কাতার, ইতালিসহ বেশ কিছু দেশে বাংলাদেশি প্রবাসী দর্শকদের কাছেও আমরা কৃতজ্ঞ, যারা ভালোবেসে আমাদের ধন্য করেছেন, করে চলেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই অনেক কথা বলছেন এই ছবিটির সাফল্য নিয়ে। নানা কৌশলে আলোচনা থেকে ‘ঢাকা অ্যাটাক-কে সরাতে চেয়েছেন। এখনো চাচ্ছেন। কিন্তু দর্শকপ্রিয় একটি সিনেমাকে কেউ আড়ালে নিতে পারে না। তবে এসব প্রতিযোগিতায় যেতে চাই না। আমি একটি প্রতিযোগিতাই বিশ্বাস করবো, সেটি হচ্ছে আমাদের সিনেমাকে বিশ্ব বাজারে নিয়ে যেতে হবে। সেজন্য সবাইকে একটি পরিবার হয়ে কাজ করতে হবে।

Advertisement

‘ঢাকা অ্যাটাক’র আগেও অনেক সিনেমা ইতিহাস তৈরি করেছে। কিন্তু ধারাবাহিকতাটা থাকেনি। আমি চাই সেটা থাকুক। প্রতি সপ্তাহেই সুপারহিট ছবি আসুক। সেগুলো দেশ-বিদেশে বাজিমাত করুক। ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ভারতের অনেক বড় বাজেট ও তারকার ছবির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিদেশের হলগুলোতে চলেছে। আমি মনে করি এটা বাংলাদেশি সিনেমার জন্যই প্রাপ্তি। কার ছবি গেল কার ছবি গেল না সেটা কোনো বিষয় নয়। আস্তে আস্তে বিদেশের বাজারে যাওয়া চর্চাটা তো হচ্ছে। এটাই ইতিবাচক।’

গলাবাজিতে নয়, ছয় সপ্তাহ পেরিয়েও ‘ঢাকা অ্যাটাক’র জয়জয়কার চলছে সিনেমা হলে। রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার, বলাকাসহ দেশের বেশ কয়টি সিনেমা হলে চলছে ছবিটি। তারমধ্যে উল্লেখ্য খুলনার লিবার্টি এবং সংগীতা সিনেমা হল, সিলেটের পিক্স সিনেপ্লেক্স। পাশাপাশি অস্টেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ, ফ্রান্সের প্যারিস মাতিয়ে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ এখন ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে প্রদর্শিত হচ্ছে।

তারমধ্যে ইতালির রোম শহরে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়ে প্রশংসিত হয়েছে। পাশাপাশি অ্যানকোনা শহরে আগামীকাল ১২ নভেম্বর রাত ১১টা, ভেনিসে সন্ধ্যা ৬টা এবং ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় প্রদর্শনী চলবে গ্যাল্লারাতে ও মিলানোতে। ইতালি প্রবাসীদের ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে ছবি দেখতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আরেফিন শুভ। তার সঙ্গে রয়েছে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবির বিশাল টিম। বলা যেতে পারে আরিফিন শুভই একমাত্র নায়ক হতে যাচ্ছেন ঢাকাই ছবির ইতিহাসে যার সিনেমা বিশ্বের সর্বাধিক দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগে প্রদর্শিত হয়েছে। ছবিটিকে নিজের ক্যারিয়ারের অনবদ্য এক সংযোজন বলেও দাবি করেন তিনি।

এ ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন মাহিয়া মাহি, এবিএম সুমন, নওশাবা, আফজাল হোসেন, আলমগীর, শতাব্দী ওয়াদুদ প্রমুখ। ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সানী সানোয়ার হুসাইন।

Advertisement

‘ঢাকা অ্যাটাক’ যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে স্প্ল্যাশ মাল্টিমিডিয়া, ঢাকা পুলিশ পরিবার কল্যাণ সমিতি লি. এবং থ্রি-হুইলারস লি.।

এলএ/আরআইপি