লালন সাঁই, হাছন রাজা, শাহ আব্দুল করিমরা আজ ভর করবেন লোকশিল্পী শাহনাজ বেলীর কণ্ঠে। ঢাকা আন্তর্জাতিক ফোক ফেস্টিভালের শেষ দিনের আসরে গাইবেন জনপ্রিয় ফোকশিল্পী শাহনাজ বেলী।
Advertisement
জাগো নিউজের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, ‘সাধকদের গান নিয়েই তো পথ চলছি। তাদের গান গাইছি বলেই আজ আমার বিশেষ পরিচিতি। তাই আজকের আসরেও সেই দিক বিবেচনা রেখেই গান করব।’
কুষ্টিয়া-যশোর এলাকার সর্বহারা রাজনীতির ভয়ঙ্কর তোপ এলো জীবনে। অপরাধ গান গাওয়া। সাধুসঙ্গ করা। শরিয়তি-মারফতি আর লালন গীতির চর্চা করা। প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পার হননি তখনও। পুতুল খেলার বয়সেই বাবার হাত ধরে বসতভিটা থেকে পালিয়ে জীবন রক্ষা। রাতের আঁধারে যেন এক অনিশ্চিত গন্তব্যে যাত্রা।
সমাজ, কর্তৃত্বের কাছে অসহায়ত্ব স্বীকার করে ঢাকায় এসে আনসার-ভিডিপির অর্কেস্ট্রায় (সাংস্কৃতিক বিভাগ) চাকরি নেন অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শাহনাজ বেলী। সঙ্গে বাবাও। গানপিপাসু বাবা-মেয়ে অর্কেস্ট্রায় এসে যেন প্রাণ ফিরে পান। সুর মেলাতে থাকেন আধুনিক যন্ত্রে। বিখ্যাত সুরকার, যন্ত্রীদের নৈকট্য লাভে গ্রামবাংলার বাউল গানকে পরিণত রূপ দিতে থাকেন। সুর-ছন্দে বদলে যায় জীবনের ছন্দও।
Advertisement
যখন বাউল গানে শহরের রঙিন মঞ্চ মাত করে দিচ্ছেন, ঠিক তখনই নজরে পড়েন অসুস্থ মনের অধিকারী এক শহুরে মানুষের। জীবনছন্দের পতন যেন এখানেই। নেশাগ্রস্ত স্বামীর সংসার জালে আটকাপড়ে দীর্ঘ এক দশক গানের জগৎ থেকে হারিয়ে থাকা। ক্যাসেট-অ্যালবামের সুবর্ণ সময়ে সমমানের শিল্পীরা যখন দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তখন তিনি নিরালয়-নিভৃতে চোখের জল ফেলছেন।
তবুও আশা ছাড়েননি। স্বপ্ন-সাধের সঙ্গীত ভুবনকেই ছুঁয়েছেন জীবনের সব রকম ঝড়-ঝাপটা সামলে। গ্রাম-সংসার-স্বামী সবই ছেড়েছেন। ছাড়তে পারেননি গানের ভুবন। সুরের মায়া। জীবনের উথাল-পাতাল, চড়াই-উৎরাই সব পেরিয়েছেন গানের প্রেমেই।
এএসএস/বিএ/আরআইপি
Advertisement